দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:   বাংলাদেশে কোনো ষড়যন্ত্রকারীর কোনো ষড়যন্ত্র আর বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যারা এ দেশকে ভালোবাসে তারা কখনো খুনি হতে পারে না, মানুষ খুন করতে পারে না। দেশ প্রেমিকরা কখনো পালায় না, পালাতে পারে না। তাহলে কারা পালায়? আপনারা জানেন, আপনারা জেনেছেন, খুনি ও চোররা পালায়। পালিয়ে জানে বাঁচতে পারবেন না। আপনাদেরকে ধরে দেশে ফেরত পাঠাবে। পাপাচাররা কখনো জনতার চোখ ফাঁকি দিতে পারে না।

 

‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত’ রাজধানীতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। রবিবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামী এ দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ফলপ্রসূ ও অর্থবহ করতে তারুণ্য নির্ভর বৈষম্যহীন এবং মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির। এ লক্ষ্যে শহীদদের স্বপ্নের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জামায়াত কাজ করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। জুলাই-আগস্টে প্রতিটি শহীদ পরিবারের অন্তত একজন যেন সরকারি চাকরি পান, সে দাবিও করেছেন আমির।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ফ্যাসিবাদের দোসর মাস্টারমাইন্ড আওয়ামী লীগের লগি বৈঠার তাণ্ডবে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। সেদিন শুধু বাংলাদেশ না, পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। মানুষ রূপি বর্বর পশুদের মাধ্যমেই এমন তাণ্ডব সম্ভব। ক্ষমতায় যাওয়ার সীমাহীন লালসা থেকে সেদিন হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। পথ হারিয়ে জাতি ২০০৬ সাল থেকে লড়াই করে বহু জীবন ও তাদের বিনিময়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট মুক্ত হয়েছে।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘আল্লাহ ক্ষমতা দেওয়ার মালিক, কেড়ে নেওয়ার মালিক। আল্লাহর ফায়সালার সঠিক। কোনো শাসক যখন দেশের মালিকে পরিণত হয় তখন আল্লাহ তাকে ছেড়ে দেন না। আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। শেষ পর্যন্ত তারা আল্লাহর কাছে ধরা খেয়েছে। জুলুমের ক্ষীণ বিচার এ পৃথিবীতে হবে, আসল বিচার হবে আখেরাতে। দুনিয়ার বিচারটাও আমরা দেখতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘তারা যতগুলা নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে প্রত্যেকটি হত্যার আমরা ন্যায়বিচার চাই। আদালতের কাছে আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমাদের ওপরে যে পরিমাণ জুলুম করা হয়েছে সেই জুলুম যেন তাদের ওপর করা না হয়। তবে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে যেন তাদের আসল পাওনাটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তাতে যদি কারো ফাঁসি হয় হবে, আমৃত্যু কারাদণ্ড যদি হয় হবে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় হবে, যার যে পাওনা তাই যেন দেওয়া হয়।’

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তারাই তো বলতেন বিচার বিভাগ স্বাধীন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাহলে তিনিও তো আইনের ঊর্ধ্বে না। যে অপকর্ম করেছেন তা আপনাকে প্রত্যক্ষ করতে হবে, তার স্বাদও গ্রহণ করতে হবে।

জামায়াত আমির বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী বলেছিলেন- আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে দুদিনের মধ্যে পাঁচ লাখ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মারা যাবে। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই এত বড় বিপ্লব, অভ্যুত্থানের পর কয়জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মারা গেছেন? পাঁচ লাখ লোককে কোথায় হত্যা করা হয়েছে? ৫ হাজার, পাঁচশ, ৫০ জন, পাঁচ জন? কিছুই হয়নি। আওয়ামী লীগ দানব হতে পারে কিন্তু এ দেশের মানুষ মানব।