দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  আদানির বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার অনেক টাকা বাকি রেখে গেছে। তবে কোনো একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার কাছে বাংলাদেশ জিম্মি হবে না। গতকাল রবিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক  প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ও কোনো একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার কাছে বাংলাদেশ জিম্মি হবে না।

তিনি বলেন, আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের খবরে মর্মাহত সরকার। এই পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। তবে পাওনা পরিশোধের সর্বক্ষমতা এই সরকারের আছে।

তিনি বলেন, ‘আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে—এমন কোনো চিঠি আমরা পাইনি।

এমন কিছু হলে আমরা সেটার কনডেম (নিন্দা) করি।’

এদিকে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া ৮৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ না করা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার। গত ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে উল্লেখিত শর্ত পূরণ করেনি বিপিডিবি।

বকেয়া পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দেয় ভারতের আদানি গ্রুপ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডলার সংকটের কারণে সময়মতো অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। আদানির পাওনা প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র এস আলম ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও উৎপাদন কমেছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পেমেন্ট দেওয়ার গতি বেড়েছে। সামনে আরো বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে।’

তিনি বলেন, ‘আদানি গ্রুপকে গত মাসে ৯.৭ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট করা হয়েছে, যেটা আগস্ট বা আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ। আমাদের তরফ থেকে সর্বোচ্চ পেমেন্ট আরো দ্রুত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

দেশের রিজার্ভ বাড়া শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো রিজার্ভে হাত না দিয়েই করতে পারছি। পেমেন্ট ৭০০ মিলিয়ন ডলার বাকি আছে। সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে করে দিতে পারব। আমরা কারো দ্বারা পাওয়ার হোস্টেজ (জ্বালানিনির্ভরতা) হব না। নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হব।’