দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো গৌরবময় বিজয়ের মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ঘটনা মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গৌরবের অধ্যায় রচিত হয়। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ মাসেই পূরণ হয় বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ। বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই বিজয়ের মাস।

 

১৯৭১ সালের ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগ আর কয়েক লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের বিজয়। ডিসেম্বরের বেশ কিছু ঘটনা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়কে দ্রুত ত্বরান্বিত করে। প্রাণ বাঁচাতে পাকিস্তানি হানাদাররা বীর বাঙালির কাছে আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে থাকে। বাংলাদেশ দ্রুত মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যায়। একপর্যায়ে সেই রেসকোর্স ময়দানেই পাকিস্তানি বাহিনী নতি স্বীকারে বাধ্য হয়। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথ বেয়ে আসে পরম কাঙ্ক্ষিত বিজয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ১ ডিসেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল একটি দিন। এদিন দিল্লিতে রাজ্যসভার অধিবেশনে দেওয়া এক বক্তৃতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণের নির্দেশ দেওয়ার জন্য ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহ্বান জানান। ইন্দিরা গান্ধী বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য অপসারণই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান। ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের জনসাধারণকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ভেতরে গেরিলা আক্রমণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেনাবাহিনী আরও ভয়াবহভাবে নিরীহ জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বুড়িগঙ্গা নদীর অপর পারে জিঞ্জিরায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে একদিনেই হত্যা করা হয় ৮৭ জনকে। বাঙালির জন্মভূমি শত্রুমুক্ত করার লড়াইকে আড়ালে রাখতে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে বেতারে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। কিন্তু সেদিন তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই বাঙালিকে বিজয় অর্জন থেকে পিছিয়ে দিতে পারেনি।