‘স্বেচ্ছাসেবককে গুরুত্ব দিয়ে নীতিমালা করেছে সরকার’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান (এনডিসি) বলেছেন, স্বেচ্ছাসেবককে গুরুত্ব দিয়ে সরকার একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। যেকোনো বয়সের মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হতে পারে। কেউ চাইলে বিদেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বেচ্ছাসেবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টারি সার্ভিস ওভারসীজ বাংলাদেশ (ভিএসও) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ বছর বিশ্ব স্বেচ্ছাসেবী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “সবার জন্য সবকিছু”।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। স্বাগত বক্তব্য দেন ভিএসও বাংলাদেশ র কান্ট্রি ডাইরেক্টর খাবিরুল হক কামাল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মানিকহার রহমান ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এর পরিচালক মঈনউল ইসলাম।
সচিব কামরুল হাসান বলেন, এই মুহুর্তে বিভিন্ন সেক্টরে ৭৭ লাখ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। সরকার তাদেরকে বিভিন্ন ধরেনর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। বিশ্বের অনেক দেশে এতো মানুষ নেই। ২০২১ সালে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য জাতিসংঘ থেকে পুরস্কার পেয়েছি।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ হয়ে থাকে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সকল দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা যদি হৃদয় দিয়ে কাজ না করতো তাহলে সফল হতে পারতাম না। সরকারের এককভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। গত বন্যার সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছে। যেকোনো দুর্যোগে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসে কাজ করি।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মানিকহার রহমান বলেন, সরকার এনজিওগুলোর মাধ্যেমে ৯ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এটা সফলভাবে শেষ করতে পারলে সাধারণ মানুষ অনেক লাভবান হবে।
তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এরমধ্যে ২৩ লাখ মানুষ উদ্যোক্তা হয়েছে। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দুইজনকে প্রশিক্ষণ নিলে একজনকে কাজে লাগানো। যুব উন্নয়ন থেকে ৭ দিন থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এটা বাড়ানোর জন্য সরকার কাজ করছে। তবে বাজেটে বরাদ্দ কম থাকায় অনেক কাজ করা যাচ্ছে না। যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে চলতি অর্থ বছরে ২১০০ কোটি বরাদ্দ চাওয়া হলেও মাত্র ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা আগের অর্থবছরেই বরাদ্দ ছিল।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এর পরিচালক মঈনউল ইসলাম বলেন, সরকারের যেকোনো দপ্তর থেকে নিবন্ধিত হলে বিদেশী ফান্ড পাওয়ার কথা কিন্তু একটি পরিপত্রের কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এনজিও ব্যুরোর পক্ষ থেকে পরপত্র ও আইনের বিষয়গুলো সংশোধনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নিজেকে সংশোধন করতে হবে। আর স্বেচ্ছাশ্রম হলো ’নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানো’। এটা সবাই করতে পারে না।
ভিএসওর কান্ট্রি ডিরেক্টর খারিরুল হক কামাল বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। ভবিষ্যতে সুন্দর দেশ গড়তে হলে স্বেচ্ছাসেবীদের এগিয়ে আসতে হবে। সব স্বেচ্ছাসেবক একত্রে কাজ করতে পারলে দেশকে একটি সমৃদ্ধির জায়গায় নেওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভিএসও প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে অনুষ্ঠান করেছে। আগামী দিনে আরো বড়ভাবে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করা বলেও জানান তিনি।
এছাড়া আরো বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি ড. আরমান হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি রেহনুমা রিদি, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমগ্রুভড নিউট্রিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন রোল্যান্ড ফোর্বস, ইউএনএফপিএ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, মাসাকি ওয়াতাবে, সুইডেন দূতাবাসের প্রথম সচিব নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, আন্দ্রে কারস্টেন্স। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভিএসও বাংলাদেশ এর প্রকল্প ম্যানেজার মো: শফিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ২১ জন স্বেচ্ছাছাসেবীকে তাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়।