দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপির দেওয়া ৩১ দফা জনগণের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্বাচন হলে জনগণ যে সিদ্ধান্ত দেবে বিএনপি সেটা মেনে নেবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

 

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকেল ৫টা তিন মিনিটে নিজের বক্তব্য শুরু করেন। শেষ করেন সন্ধ্যা ৫টা ২৩ মিনিটে।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দুই বছর আগে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ২৭ দফা দিয়েছিলাম। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। কিন্তু আমাদের জানা ছিল না কবে স্বৈরাচারের বিদায় হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৩১ দফা অর্জন কমবেশি তখনই করতে পারবো যখন জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার গঠন করতে পারবেন। এজন্য ৩১ দফাকে জনগণের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।

তারেক রহমান আরও বলেন, ৩১ দফা জনগণের সমর্থন নেওয়া ও আস্থা অর্জন ও ধরে রাখার দায়িত্ব আমার, আপনার, আমাদের সবার। জনগণকে আস্থায় রাখতে হলে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা সবাই যে যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন। আপনারা প্রত্যেকে বিএনপির নেতা, অ্যাম্বাসেডর, বিএনপির প্রতিনিধি।

বিএনপির একার আন্দোলনে স্বৈরাচার পালিয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সব দল কাজ করেছে, সব মানুষ একত্র হয়েছিল বলেই স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। তবে আমাদের ওপর জনগণের আস্থা আছে বলে আমাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। আমরা যদি চুপচাপ বসে থাকি তাহলে কোনো কাজ হবে না। আমরা এমন কোনো ভুল চিন্তা বা কাজ যেন না করি যাতে আমরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। তাই যারা ভুল করছে তাদের বোঝাতে হবে, সতর্ক করতে হবে। সবাইকে মিলেই আমাদের কাজ করতে হবে।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমাদের জনগণকে আস্থায় রাখতে হবে, প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে, তাদের কথায় উঠতে বসতে ও চলতে হবে। রাজনীতির মূল কথা হচ্ছে জনগণের আস্থা অর্জন। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে যে যে কৌশল আছে তা আমাদের করে যেতে হবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, হাসিনার অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন জুলুমের প্রতিবাদ হচ্ছে বিএনপির ৩১ দফা। এটি একটি মানবিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রগঠনের বুকলেট।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ৩১ দফার প্রণয়ন কমিটির সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, হাসিনা মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের বুকের ওপর জগদ্দল হয়ে বসে থাকা পাথর সরে গেলেও বাংলাদেশ বিপদমুক্ত নয়। গত চার মাসের অভিজ্ঞতা বলে, এখনো হাসিনার প্রেতাত্মারা সক্রিয় রয়েছে। তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র দেশের বিরুদ্ধে, বিএনপির বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, দেশে বিদেশে নানা শক্তি সক্রিয়। হাসিনার লুটেরা বাহিনী কাজ করছে। হাসিনা প্রতিবেশী একটি দেশে বসে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। তারা আমাদের সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে কলকাতা ও আগরতলায় আমাদের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে আমাদের পতাকার অবমাননা করা হয়েছে। হাইকমিশনে হামলা জেনেভা কনভেশন পরিপন্থী। এর অর্থ আমাদের টেরিটরিতে ঢুকে গিয়ে হামলা করা। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন প্রমুখ।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্মশালা শুরু হয়। এতে অংশ নেন রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জের বিএনপির নেতারা। তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তারেক রহমানও এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।