ট্রাম্পের নজর কাটাতে গ্রিনল্যান্ডে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে ডেনমার্ক
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: গ্রিনল্যান্ডের জন্য প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক সরকার। নব-নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর্কটিক অঞ্চলের এই ভূখণ্ডটি কেনার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘোষণা দিলো ডেনিশ সরকার।
ডেনিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ট্রোলস লুন্ড পাউসেন জানান, এই প্যাকেজের প্রতিরক্ষা পরিমাণ ‘ডাবল ডিজিট বিলিয়ন’ ক্রোনে (ডেনিশ মুদ্রা)। যা অন্তত দেড় বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। খবর বিবিসি
প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির ঘোষণার এই সময়কে তিনি ‘আইরনি অব ফেইট’ বা দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে বর্ণনা করেন। এর আগে ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্টে লেখেন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতার জন্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ ‘একটি আবশ্যকতা’।
গ্রিনল্যান্ড, একটি স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ অঞ্চল, যেখানে একটি বড় মার্কিন মহাকাশ গবেষণাগার রয়েছে এবং এটি ইউরোপের সঙ্গে উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত জাহাজ রুটে অবস্থিত, যা এর কৌশলগত গুরুত্ব বাড়ায়।
ডেনমার্ক সরকার ঘোষিত প্যাকেজে নতুন দুটি পরিদর্শন জাহাজ, দুটি দীর্ঘপাল্লার ড্রোন এবং দুইটি কুকুর স্লেড দলের জন্য তহবিল অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও, গ্রিনল্যান্ডেরনুক শহরে আর্কটিক কমান্ডের কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এবং গ্রিনল্যান্ডের তিনটি প্রধান বেসামরিক বিমানবন্দরের একটি আপগ্রেড করার জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হবে যাতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করা যায়।
পাউসেন বলেন, অনেক বছর ধরে আমরা আর্কটিকে যথেষ্ট বিনিয়োগ করিনি, এখন আমরা সেখানে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করার পরিকল্পনা করছি।
তবে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পের এমন মন্তব্য এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দিলে ডেনিশ নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। সেই সময় ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন এই ধারণাটিকে ‘অবাস্তব’বলে বর্ণনা করেন। এরপর ট্রাম্প ডেনমার্কে একটি রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করতে বাধ্য হন।
সে সময় ট্রাম্পের মন্তব্যের পর গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেডে বলেন, ‘আমরা এটি বিক্রি হচ্ছি না’। তবে তিনি প্রতিবেশীদের সাথে সহযোগিতা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগীতা মূলক আচরণের আহ্বান জানান।
ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নন যিনি গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দিয়েছেন; এই ধারণাটি প্রথম উত্থাপিত হয় ১৮৬০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনের সময়।