দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লায় গুলিতে সাগর হোসেন (২১) নামের এক যুবকের বাঁ চোখ নষ্ট ও পুরো শরীরে শতাধিক ছররা গুলি লাগার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে প্রধান আসামি করে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৯ নম্বর আমলি আদালতে মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা নামের এক বিএনপি নেতা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

আহত সাগর হোসেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের আবদুল মমিনের ছেলে। মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা কুমিল্লা নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি এবং কুমিল্লা কোটবাড়ি এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী। গুলিবিদ্ধ সাগর হোসেনকে নিজ দোকানের কর্মচারী হিসেবে মামলায় উল্লেখ করেছেন গোলাম মোস্তফা।

মামলায় বাহাউদ্দিন বাহারসহ ৬৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাকিরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও বাহারের অনুসারী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোডের পূর্ব পাশে কুমিল্লা শহরমুখী সড়কে বিক্ষোভ মিছিল চলছিল। সেখানে অন্যান্য ছাত্র-জনতার মতো সাগরও যোগ দেন। একপর্যায়ে প্রধান আসামির (বাহাউদ্দিন) নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ বৈষম্যবিরোধী নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ২ নম্বর আসামি তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করেন। এতে গুলি সাগরের বাঁ চোখে, মুখে ও মাথার বিভিন্ন অংশে বিদ্ধ হয়। ৩ নম্বর আসামি তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাগরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বুক লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন। এভাবে অন্য আসামিরা সাগরসহ আন্দোলনরতদের ওপর গুলিবর্ষণসহ হামলা চালান।

মামলার বাদী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, সাগর আমার দোকানে প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করে। সেদিন আসামিরা তাকেসহ আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছিল। আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই। সাগরের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। ছেলেটার পুরো শরীর ছররা গুলিতে ঝাঁজরা। বলতে গেলে ছেলেটার জীবনই শেষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রাজ্জাক বলেন, এখনো আদালতের নির্দেশনাসহ মামলার কপি আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। মামলার কপি হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।