ঘুষ কেলেঙ্কারি: দোষী হয়েও জেল খাটতে হচ্ছে না ট্রাম্পকে
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনে জয়লাভ করে আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মসনদে বসতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েও অবশেষে আদালতের রায়েই জেল-জরিমানা থেকে রেহাই পেয়ে গেলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) নিউ ইয়র্কের ফেডারেল আদালতের বিচারপতি হুয়ান মার্চেন ট্রাম্পের মামলার রায় দিয়েছেন।
ট্রাম্পকে সাজা থেকে ‘নিঃশর্ত অব্যাহতি’ দিয়ে রায় দিয়েছেন আদালত। তবে একটি বিষয় ইতিহাসে রয়েই গেল, সাজা না হলেও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায় বহালই থেকে গেল।
নিঃশর্ত অব্যাহতির কারণ সম্পর্কে বিচারপতি মার্চেন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়াকে তুলে ধরেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে জয়কে জনগণের রায় হিসেবে সম্মান করে বিচারপতি তার সিদ্ধান্ত শুনিয়েছেন।
এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার ফৌজদারি মামলায় চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেকর্ড রইল ট্রাম্পের নামে। তবে ট্রাম্প চাইছিলেন মামলাটিই ‘ভুয়া’ বলে খারিজ করে দেওয়া হোক।
রায় ঘোষণার সময় ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেন ট্রাম্প। পাশে ছিলেন তার আইনজীবী।
রায়ের পর স্বভাবসিদ্ধভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। কোনো সাজার ঘোষণা না আসার পরপরই ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, এই রায় থেকেই বোঝা যায় এটি কোনো মামলাই না। তিনি আরো লিখেছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
২০১৬ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একজন পর্নো তারকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলতে তাকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে ওই নারীকে দেওয়া ঘুষের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্যবসায়িক নথিপত্রেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
এই ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের মে মাসে মামলাটির রায় হয়; যেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি বিভিন্ন ধারার অভিযোগের সত্যতা পান আদালত। ধারাগুলো ছিল ফৌজদারি অপরাধের। দোষী সাব্যস্ত করা হলেও তখন সাজার রায় ঘোষণা থেকে বিরত ছিলেন আদালত।
২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় মেয়াদে অভিষেকের আগে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না করার জন্য আবেদন করেছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা। তবে আদালত তা আমলে নেননি। শুক্রবারই শুনানি করেন এবং রায় দিয়ে দেন।
গত বছর মে মাসে ট্রাম্প দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর ওই বছর ২৬ নভেম্বর সাজার রায় ঘোষণার তারিখ ছিল। তবে ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পান ট্রাম্প। সেই সুবাদে বিচারপতি মার্চেন তার বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে দেন অনির্দিষ্টকালের জন্য। অবশ্য সেই থেকে দেড় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে বিচারপতি তার রায় শুনিয়ে দিলেন।