আমদানি করায় কমছে চালের দাম
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পাকিস্তান, ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করায় দেশে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। তিন দেশ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ইতোমধ্যে ১৪ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এই চাল বাজারজাত করার পর প্রতি কেজিতে খুচরা বাজারে ৩ থেকে ৫ টাকা দাম কমেছে। এর সাথে সরকারি খাদ্যবান্ধব চাল প্রতিজন ভোক্তাকে ৫ কেজি করে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করায় চালের বাজারে অস্থিরতা থেমেছে।
জানা গেছে, দিনাজপুরের হিলি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১৪ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ ও ১৮ মেট্রিক টন আতপ চাল বাজারে এসেছে। গত সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি কমেছে ৩ থেকে ৫ টাকা। পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে চাল আসা শুরু করলে দাম আরো কমে আসবে। এছাড়া বোরো ধান আসা পর্যন্ত বাজার স্থিতিশীল থাকবে।
বগুড়া খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বাজার স্থিতিশীল করতে পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতব চাল, ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ও মিয়ানমার থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হবে। এজন্য তিন দেশের মধ্যে সকল চুক্তি সম্পন্ন করেছে খাদ্য মন্ত্রাণালয়। ইতোমধ্যে ভারত থেকে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। যে কারণে বগুড়ার বাজারে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম।
এদিকে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিও করা হয়েছে। চালের বাজারে যেন কিছুতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য সরকারিভাবে মনিটরিং করা হবে। কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে চাল মজুদ রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে সেটিও মনিটরিং করবে প্রশাসন।
সূত্র আরো জানায়, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ২৪ জন ওএমএস-এর ডিলার রয়েছেন। সরকারিভাবে প্রতিটি উপজেলায় ২ টন করে চাল দেওয়া হচ্ছে। ডিলাররা সপ্তাহে ৫ দিন এই চাল বিক্রি করে থাকেন। সরকারি নির্ধারিত মূল্যে প্রতিজন ভোক্তাদের মাঝে ৫ কেজি করে ওএমএস-এর চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণেও বগুড়ায় চালের বাজারে ক্রেতা আগের চেয়ে কমেছে। চালের দাম কমতে শুরু করেছে। এছাড়া বগুড়া জেলায় ৪ জন চাল আমদানিকারক রয়েছেন। তারাও প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করেছেন।
বগুড়া কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে জেলায় চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৪ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ ৯৯ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন।
বগুড়া শহরের কলোনি বাজারের আশরাফ চাউল ঘরের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রশিদ জানান, বাজারে উনপঞ্চাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। রনজিৎ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকায়, কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৬ টাকায়। তবে পোলাওয়ের চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান রাজু জানান, পাকিস্তান, ভারত ও মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি করায় বগুড়ার বাজারে কমতে শুরু করেছে দাম। তিন দেশ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ভারত থেকে চাল আসতে শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে চাল আসা শুরু হলে দাম আরো কমে আসবে। এছাড়া বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ওএমএস’র চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় দাম কমেছে।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।