দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সারাদেশে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের হুমকি দিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিকরা। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পত্র বাতিল করে রেলওয়ে কোড ও বিধি বিধানের আলোকে রানিং স্টাফদের 'পার্ট অব পে' রানিং অ্যালাউন্স প্রদানের দাবিতে তারা এ হুমকি দেন।

 

 

রোববার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সেখানে বলা হয়, গত ২৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত পত্রটি রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড ও রেলওয়ের অন্যান্য আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড ১৯৭২ সালে জারিকৃত বাংলাদেশ এডাপটেশন এ্যাক্ট দ্বারা গৃহীত ও কার্যকর রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল জারিকৃত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ তে বলা আছে, রেলওয়ে কর্মচারীদের জন্য রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড প্রযোজ্য।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সুত্রোক্ত পত্রে নিয়োগপত্রের শর্ত সংশোধন করে রানিং স্টাফরা রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড ভলিউম অনুযায়ী রানিং এলাউন্স প্রাপ্য হবেন বলা হলেও, আবার বলা হয়েছে মাসিক রানিং এলাউন্স এর পরিমাণ প্রাপ্য মূল বেতনের বেশি হবে না। রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড ভলিউমে রানিং অ্যালাউন্সপ্রাপ্যতার বিষয়ে কোনো ধরনের সীমা নেই, যতটুকু কাজ করবে, আইন অনুযায়ী ততটুকু রানিংঅ্যালাউন্স পাবে।

আরও বলা হয়, রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোডে চলন্ত ট্রেন ছাড়াও অর্জিত ছুটি ও অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে রানিংঅ্যালাউন্স প্রাপ্যতার বিধান রয়েছে। এ কোড অনুযায়ী প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ সময়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন বিধি-বিধান তৈরি করেছে, যা এখনও বলবৎ আছে। রেলওয়ে এস্টাবলিশমেন্ট কোড অনুযায়ী ৭৫ শতাংশ রানিং এলাউন্স রানিং স্টাফদের বেতনের অংশ (পার্ট অব পে)। যুগ যুগ ধরে রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে বেতনের অংশ হিসাবে ৭৫ শতাংশ রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন, আনুতোষিক প্রদান করা হয়ে আসছে। যা বিভিন্ন সময় অর্থ মন্ত্রণালয়, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় যারা স্বীকৃত।

রেলওয়ে ডিজির কাছে পাঠানো চিঠিতে আরওবলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে সবই বাংলাদেশের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনের কিছু অংশ মেনে নিব, কিছু অংশ মেনে নেবনা, এ ধরনেরকোনোকিছু করা বেআইনি। সরকারি আইন ও বিধিবিদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়েতে মনগড়া শর্ত আরোপের সুযোগ নেই।

তাই সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে রানিংঅ্যালাউন্স যোগে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানে সব অসম্মতি প্রত্যাহার, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩ নং শর্ত এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক পত্র বাতিল করে রেলওয়ে কোড ও বিধি বিধানের আলোকে আদেশ জারি করা না হলে আগামী মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি ) থেকে সব রানিং স্টাফ অনির্দিষ্টকালের কর্ম বিরতি পালনে বাধ্য হবেন।

এদিকে সোমবার (২৭জানুয়ারি) এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে রেল ভবনে রেল সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে।