দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে কোনো উইকেট বাকি ছিল না অবশ্য।

 

প্রথম চার বলে দুই রান করে চার রান নিলেন আদিল রশিদ ও মার্ক উড। কিন্তু পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দেন রশিদ। ৮ রানের হারে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। অপরদিকে উল্লাসে মেতে ওঠে আফগানিস্তান। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এসে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল তারা।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ হার দিয়ে শুরু করা আফগানিস্তান আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস ভাগ্য জিতে। ব্যাট করতে নেমে তারা ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ৩২৫ রান। যা তাড়া করতে নেমে ৩১৭ রান পর্যন্ত যায় ইংল্যান্ড। এর মধ্যেই হারিয়ে ফেলে সবগুলো উইকেট। ফলে ৮ রানের জয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখল আফগানরা।

হার দিয়ে আসর শুরু করা ইংল্যান্ড আজ বোলিংয়ে দারুণ শুরু পেয়েছিল। বিশেষ করে জফরা আর্চারকে ঠিকমতো সামাল দিতে পারছিলেন না আফগান ব্যাটাররা। যে কারণে দলীয় ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর শহীদির (৬৭ বলে ৪০ রান) সঙ্গে ১০০-এর বেশি রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেন ইব্রাহীম।

দলীয় ১০৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর আফগানিস্তান এরপর আর থেমে থাকেনি। প্রথমে আজমতউল্লাহ ওমরজাই (৩১ বলে ৪১ রান) ও পরে মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে দলকে রানের পাহাড়ে নিয়ে যান ইব্রাহীম। তিনি নিজে করেন ১৭৭ রান। ১৪৬ বল স্থায়ী ইনিংসে ১২টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন আফগান ওপেনার। পাশাপাশি দুটি রেকর্ডও গড়েন তিনি।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন ইব্রাহীম। এর আগে এই আসরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লাহোরে বেন ডাকেটের ১৬৫ রান ছিল সর্বোচ্চ। আফগানিস্তানের জার্সিতেও এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে ২০২২ সালে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬২ রান করে আগের রেকর্ডটির মালিকও ছিলেন ইব্রাহীম-ই।

রান তাড়ায় নেমে চতুর্থ ওভারেই ফিল সল্টকে (১২) হারায় ইংল্যান্ড। তিনে নেমে জেমি স্মিথ কেবল যোগ করেন ৯ রান। আরেক ওপেনার বেন ডাকেট লড়েন কিছুক্ষণ। কিন্তু ৩৮ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। চারে নেমে দলের হাল ধরেন জো রুট। একপ্রান্তে একাই লড়াই চালাতে থাকেন তিনি। কিন্তু অপরপ্রান্তে তাকে ঠিকঠাক সঙ্গ দিতে পারছিলেন না কেউই।

পাঁচে নামা হ্যারি ব্রুক ২১ বলে ২৫ রান করে উইকেট হারান। জস বাটলারের সঙ্গে অবশ্য ভালো জুটি গড়েন রুট। তাদের ৯১ বলে করা ৮৩ রানের জুটিটি ভেঙে দেন ওমরজাই। ৪২ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন ইংলিশ অধিনায়ক। এরপর লিভিংস্টোনের ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। সপ্তম উইকেটে জেমি ওভারটনের সঙ্গে জুটি গড়েন রুট। ৫০ বলে ফিফটি হাকানো এই ব্যাটার পরের পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৪৮ বলে। শতক হাকিয়েও লড়াই চালাতে থাকেন তিনি।

কিন্তু জয় এনে দিতে পারেননি। ওমরজাইয়ের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ১১১ বলে তার ১২০ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১ চার ও এক ছক্কায়। লড়তে থাকা ওভারটন লম্বা করতে পারেননি ইনিংস। ২৮ বলে ৩২ রান করে বিদায় নেন তিনি। শেষদিকে জয়ের সম্ভাবনা ছিল অনেকটাই। কিন্তু পারেনি ইংলিশরা। জফরা আর্চার ১৪ ও আদিল রশিদ ৫ রানে বিদায় নিলে এক বল আগেই পরাজিত হয় তারা।

আফগানিস্তানের হয়ে বল হাতে আলো ছড়ান আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ৯.৫ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। দুটি উইকেট পান মোহাম্মদ নবি। একটি করে নেন ফারুকি, রশিদ ও গুলবাদিন নাইব।