দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং কমিশনারদের পদত্যাগসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিএসইসির চেয়ারম্যান ‘অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত না করার’ প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও তার পদত্যাগের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনড় অবস্থানে আছেন।

বৃহস্প‌তিবার (৬ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ও বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ লিখিত বক্তব্যে চার দাবি জানিয়েছেন। এ সময় বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দাবিগুলো তুলে ধরে মিরাজ উস সুন্নাহ বলেছেন, বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ডেকে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ, চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে। সংস্কারের অংশ হিসেবে বিএসইসিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন-স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি ও দ্রুত তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ মার্চ কমিশনের কাছে তাদের ন্যায্য দাবি উত্থাপন করেছেন। এর কোনো সুরাহা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানোয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়।

বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি স্পষ্ট—আমরা কারো ক্রীড়নক না হয়ে আইন কানুন মেনে দেশের মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য ও সর্বোপরি পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু, অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে, একইরকম নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক পেয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব আর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পেল একদল অনভিজ্ঞ নেতৃত্ব। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যে জানে যে, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ অন্য কমিশনারদের পুঁজিবাজারে নিয়ে ভালো ধারণা নেই, অভিজ্ঞতা নেই, এমনকি পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের সদিচ্ছা নেই। এভাবে কাজ করা যায় না। তাদের অদক্ষতায় একদিকে যেমন পুঁজিবাজারে দুর্দিন যাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের সীমাহীন দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারী ও আইনবহির্ভূত মনোভাব ও কাজে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হতাশ। এমতাবস্থায় পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণসহ কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বার্থে ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও অন্য কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করছি। অন্যথায়, আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ কর্মবিরতি পালন করবেন।