নব্বই কর্মদিবসের মধ্যে স্টারলিংক ইন্টারনেট চালু করতে চায় সরকার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মার্কিন প্রযুক্তিবীদ ইলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবায় যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা বিস্তারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান অংশীদারিত্বে যুক্তও হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সূত্রে জানাযায়, এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে স্টারলিংকের গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপন করা হবে, যা দ্রুত ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবায় সহায়ক হবে।
বর্তমানে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছে, আর তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি দেশিপ্রতিষ্ঠানস্টারলিংকের সঙ্গেসহযোগিতার চুক্তি সই করেছে। এই সহযোগিতার আওতায় জমি বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
স্টারলিংক প্রতিনিধিদের সফরের ফলে তারা বাংলাদেশে সম্ভাব্য স্থানের তালিকা তৈরি করেছে। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব জায়গা ব্যবহার করতে চাইছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, স্থান নির্বাচন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, স্টারলিংকের সেবা বাংলাদেশের শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করবে, যা লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবমুক্ত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এখনো টেলিকম-গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হয়। স্টারলিংক এই সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও ও ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে পারে।
ফয়েজ আহমদ আরও জানান, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের সঙ্গে একটি বাস্তবসম্মত মডেল বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১৯ ফেব্রুয়ারি এক চিঠিতে স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং দেশে স্টারলিংক সেবা চালুর প্রস্তাব দেন।
তিনি মাস্ককে জানান, তার সফর বাংলাদেশের তরুণদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ করে দেবে, যারা এই উন্নত প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধাভোগী হবে।
এ বিষয়ে সমন্বয়ের জন্য প্রধান উপদেষ্টা তার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যাতে আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে স্টারলিংক সেবা বাংলাদেশে চালু করা যায়।
এর আগে, ১৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূস ও ইলন মাস্কের মধ্যে দীর্ঘ ফোনালাপ হয়, যেখানে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।