‘পাকিস্তানে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই হামলা করবে ভারত!’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা (সামরিক পদক্ষেপ) করতে পারে। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাকিস্তানকে জড়িয়ে অনবরত দেওয়া বক্তব্যের পর এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে মোদীর সরকার।
পাকিস্তান বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বলেছেন এসব কথা।
পাকিস্তানকে জড়িয়ে ভারতের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’ বলেও দাবি করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী তারার। তিনি বলেছেন,ভিত্তিহীন অজুহাত দেখিয়ে ভারতপাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা’ তথ্য পাকিস্তানের হাতে আছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে ‘গভর্নমেন্ট অব পাকিস্তান’ -এর এক্স হ্যান্ডেলে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রীর বরাতে এসব কথা বলা হয়েছে।
আতাউল্লাহ তারার বলেন, পাকিস্তান এ অঞ্চলে ভারতের স্বঘোষিত বিচারক ও সাজা কার্যকরের ভূমিকা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। দেশটির এ আচরণ বেপরোয়া। পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং এই অভিশাপের যন্ত্রণা সত্যিই বোঝে। আমরা সবসময় বিশ্বের যেকোনো স্থানে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ এবং এর বহিঃপ্রকাশের নিন্দা জানিয়ে আসছি।
আতাউল্লাহ তারারবলেন, দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান সত্যকে সামনে আনার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আন্তরিক প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যুক্তির পথ অনুসরণ না করে ভারত স্পষ্টতই অযৌক্তিকতা এবং সংঘাতের বিপজ্জনক পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার পরিণতি পুরো অঞ্চল এবং এর বাইরেও বিপর্যয়কর হবে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত এড়িয়ে যাওয়াই ভারতের আসল মতলব প্রকাশের জন্য যথেষ্ট প্রমাণ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনসাধারণের অনুভূতির কাছে কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দুর্ভাগ্যজনক এবং দুঃখজনক। ’
আতাউল্লাহ তারার হুঁশিয়ারি দেন, ভারতের এ ধরনের যেকোনো সামরিক অভিযানের জবাব নিশ্চিতভাবে এবং দৃঢ়তার সঙ্গেই দেওয়া হবে। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে যে, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং এর ফলে সৃষ্ট পরিণতির দায়ভার সরাসরি ভারতের ওপর বর্তাবে।
যেকোনো মূল্যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষায় দেশটির সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এর আগে পহেলগাঁওয়ে ওই হামলার জবাব দিতেনিজ দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে হামলার ‘সম্পূর্ণ অভিযানিক স্বাধীনতা’ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ‘শত্রুপক্ষের ওপর অভিযানের’ সবুজ সংকেত দেন তিন বাহিনীর প্রধানকে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের জাতীয় প্রতিশ্রুতি অটুট এবং তিনি ভারতের সামরিক বাহিনীর ওপর পূর্ণ আস্থারাখেন। প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, হামলার প্রতিক্রিয়ায় কখন, কোথায় এবং কীভাবে অভিযান চালানো হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা তাদের হাতে।
এর আগে মোদী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সন্ত্রাসের শেষ চিহ্নও উপড়ে ফেলতে হবে। ১৪০ কোটির ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের হোতাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে। তার দৃঢ় বার্তা, যারা এই হামলার পরিকল্পনা ও সহায়তা দিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভূস্বর্গ কাশ্মীরেরপহেলগাঁওয়ে বন্দুক হামলায় ২৮ জন নিহত হন। ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি, হামলার দায় স্বীকার করেছে 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' নামে একটি সংগঠন, যারা পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়াসংগঠন।
তবে ভারতের এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান।