দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন, একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কবে করা যায় তার তারিখ সুনির্দিষ্ট করে বলুন। কোনোভাবে যদি ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে তাহলে কেউ কিন্তু বাঁচতে পারবেন না। সুতরাং ঐক্যের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। একত্রে কাজ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে বরিশাল নগরের সদর রোডের বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আমাদের দেশে ১২ কোটি ভোটার। তার মধ্যে শ্রমিক হচ্ছে ৭ কোটি ৩৫ লাখ। যারা ভোট দিয়ে আমাদের সরকার নির্বাচিত করে, যারা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করে তারা বঞ্চিত, তারা নির্যাতিত, তারা অসহায়। কথায় কথায় তাদের ছাঁটাই করা হয়, তাদের আয় দিন দিন কমে যাচ্ছে, তাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। বিগত ১৫-১৬ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে শ্রমিকরা তাদের সমাবেশ করার, সংগঠিত হওয়ার অধিকার পায়নি। তাদেরকে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেয়নি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩-একটি আইন করে শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার অধিকার শেখ হাসিনা বন্ধ করে দিয়েছে। যতটুকু আইন করা হয়েছিল, সেটি করা হয়েছিল মালিকের স্বার্থে, শ্রমিকদের স্বার্থে নয়। তাই আজ জুটমিল, চিনিকল, গার্মেন্টস শিল্পসহ প্রতিটি জায়গায় শ্রমিকরা জীবন দিচ্ছে। শেখ হাসিনার আমলে বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালের বারান্দায় শ্রমিক নেতাদের জীবন দিতে হয়েছে।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরির জন্য আন্দোলনে শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনী, শেখ হাসিনার র‌্যাব, শেখ হাসিনার পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তারা গুলি চালিয়ে মহিলা শ্রমিক আঞ্জুমান আরা খাতুনকে হত্যা করেছে। শ্রমিক জালাল উদ্দিনকে হত্যা করলো, শ্রমিক রাসেলকে হত্যা করলো। শেখ হাসিনার গুলিতে শুধু ছাত্র নয়, শুধু জনতা নয়, শ্রমিকদেরও রক্ত গেছে। সেই রক্তে রচিত হয়েছে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সেই মহাবিপ্লব। যে আন্দোলনের শতাধিক শ্রমিক শহিদ হয়েছে।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা ১৮৮৬ সালে আমেরিকায় শুধু জীবন দেয়নি, আজও জীবন দিচ্ছে, আজও মারা যাচ্ছে, আজও রক্ত ঝড়াচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের কেউ মূল্যায়ন করি না। আমরা তাদের কেউ খবর রাখি না। দেশের ক্রান্তিকাল এখনো শেষ হয়নি, আজও শ্রমিকদের আয় দিন দিন কমে যাচ্ছে। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। আজ তাদের পরিবারে কোনো খাবার নেই, তাদের সন্তানেরা বই খাতা কিনতে না পেরে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। কে দেখবে এদেরকে? কে দেখবে এদের পরিবারকে? এমনকি বিগত সরকারের শ্রমিকবিরোধী নীতির কারণে আইটসোর্সিংয়ের নামে স্থায়ী শ্রমিকরাও কর্মঝুঁকিতে পড়ছে।