দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের জন্য তিন মাস সময় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন হতে পারে। ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে?

 

রোববার (১৮ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আমীর খসরু এ কথা বলেন। নির্বাচন যত বিলম্বিত হচ্ছে, দেশের মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে এবং মানুষ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন? আমি তো দেখছি ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের জন্য তিন মাস সময় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন হতে পারে। ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে?’ নির্বাচন দেওয়ার লক্ষ্মণ সরকারকে দেখাতে হবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমি নির্বাচন ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করছি না। ইমিডিয়েটলি যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, এটা ডিক্লেয়ার করে আপনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। আগস্ট, সেপ্টেম্বর যেকোনো সময় হতে পারে।’

আমীর খসরু বলেন, ‘যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তারা বলতে পারে। একদিনের মধ্যেও বলতে পারে। এত দিন তো লাগে না। ঐকমত্য কোথায় হয়েছে, যেকোনো কাউকে বললে এটা দুই-চার-পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে সব রেডি হয়ে যায়। ঐকমত্য যেখানে হয়েছে, এসব আপনি বলে দেন। তার ভিত্তিতে আপনি ইমিডিয়েটলি রোডম্যাপ ডিক্লেয়ার করেন।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার ‘করিডোরে’র সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে একটা বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বিনিয়োগ সম্মেলন করছে, যা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এগুলো কী জন্য? তারা সময় নষ্ট করছে। এগুলো দেখিয়ে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছে? চট্টগ্রাম পোর্ট হ্যান্ডওভার করছে। এসব সিদ্ধান্তে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছে? তাদের ম্যান্ডেট কে দিয়েছে?’

আমীর খসরু বলেন, ‘কারো ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংস্কার দেখতে চাই না। একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণ যেভাবে চায় সেভাবে সংস্কার হবে...বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পেতে চায়। তার নির্বাচিত সরকার চায়। নির্বাচনি কার্যক্রমের দিকে কেন এগোনো যাচ্ছে না? নির্বাচনি রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব যেগুলো, সেগুলো এড়িয়ে অন্য কাজ কেন? এমন ভাব করছে যে, তারা নির্বাচিত সরকার, তারা দীর্ঘমেয়াদে দেশ পরিচালনা করবে।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের রাজনীতি যারা করে, তারা দায়িত্ব পাবে না। অথচ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের লোককে প্রতিনিয়ত দায়িত্বে নেওয়া হচ্ছে। তারা কারা? হঠাৎ করে এসে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিচ্ছে। তাদের আগামী বাংলাদেশের সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কে দিয়েছে?’

বিএনপিনেতা ইশরাক হোসেনের মেয়রের দায়িত্ব প্রদানে ‘যদি আদালতে অর্ডার হয়ে থাকে, তাহলে সেটা বাস্তবায়ন হতে অসুবিধাটা কোথায়?’ এমন প্রশ্নও রাখেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে শান্তিতে আছেন। দেশটা গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে ভেবে স্বস্তিতে আছেন। পুরোপুরি স্বস্তি আমি বলতেও পারছি না। যতক্ষণ না নির্বাচন হয়ে একটা গণতান্ত্রিক অর্ডারে দেশ আসবে, ততক্ষণ উনার যে ইচ্ছে-অবদান-ত্যাগ, সেটা পরিপূর্ণতা পাবে না। স্বাভাবিকভাবে উনি সেটার জন্য অপেক্ষা করছেন।’