দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার (২১ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এ দুই উপদেষ্টার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্তর অভিযোগ এনে তাদের পদত্যাগের দাবি জানানো যৌক্তিক বলে মনে করছেন ইশরাক। এছাড়া আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে সাবেক উপদেষ্টা ও বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে অনুসরণ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ফেসবুকের ওই স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে। ’

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আপনাদেরই নাহিদ ইসলাম যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গিয়েছে সেটাই অনুসরণ করুন। উনি চাইলে হয়তো আরও কিছুদিন মন্ত্রিত্ব করে তারপর এনসিপি তে যেতে পারতেন । একটা সময় ছিল সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহরা জোরালো দাবি করলে ওনারাও হয়তো মন্ত্রিত্ব নিতে পারতেন। কিন্তু তারা রাজনীতি করবেন বলে সেই কর্মপন্থা বেছে নিয়েছেন। হয়তো একদিন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে পূর্ণাঙ্গভাবে মন্ত্রীর দায়িত্ব, ক্ষমতা ও সম্মান আবার পাবেন। ’

এ দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতার ইমেজই বাড়বে বলে মন্তব্য ইশরাকের।

আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এখনও মনে করি সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে দলীয় ও সাংগঠনিক কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে দেশ ও জনগণকে আপনারা আরও ভালো কিছু দিতে পারবেন। আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নাই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই। ’

এমন আহ্বান জানিয়ে নিজের মেয়র পদ লাভের জন্য চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ তোলেন বিএনপির এ নেতা।

ইশরাক হোসেন বলেন, এখন নিশ্চয়ই বলবেন বা ভাববেন ক্ষমতার লোভে অবৈধ মেয়র হওয়ার জন্যে দিনের পর দিন আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন দিয়ে জনভোগান্তি তৈরি করে নিজেকে সাধু বানিয়ে আমাদের নীতিবাক্য শোনাচ্ছেন তাই না? আমি নিজেও কি কম সমালোচনার শিকার হয়েছি এটি করতে গিয়ে? কিন্তু আমার আর কোনো উপায় ছিল না। আপনাদেরকে যে ভুলপথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিল এবং আজ অবধি আমাকে বাধা দেওয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে এটা মিনিমাম রাজনৈতিক বোধ সম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলব এটা ছিল ওনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া। আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কি করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে।

সবশেষে তিনি লেখেন, ‘বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে। আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই। আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?’