দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট প্রচার করা হলে সাইবার সুরক্ষা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান যুক্ত করে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধির খসড়া সংশোধনী প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোববার সন্ধ্যায় ইসির ওয়েবসাইটে এ খসড়া প্রকাশ করা হয়। খসড়ার উপর আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি। বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক এর উপর মতামত দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ আচরণবিধির খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খসড়া সংশোধনীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের সুযোগ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনপূর্ব সময়ে অর্থাৎ তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত ক্ষতিকর কনটেন্ট যেমন- ঘৃণামূলক বক্তব্য, নির্বাচনসংক্রান্ত বানোয়াট তথ্য, নির্বাচনি স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা হলে সাইবার সুরক্ষা আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট বা অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে প্রচারণা শুরুর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইলসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি জমা দিতে হবে।

প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে ভোটের প্রচারে পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন, হ্যান্ডবিল ও বিলবোর্ড কিভাবে ব্যবহার করা যাবে, কী করা যাবে না– তাও তুলে ধরা হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারণায় অপচনশীল দ্রব্য যেমন রেক্সিন বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি প্রচারসামগ্রী ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এতে অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাকে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারে তাদের অংশগ্রহণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। নির্বাচনে মাইকের ব্যবহারের শব্দের মান ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এ আচরণবিধি মানতে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর অঙ্গীকার দেওয়ার ঘোষণা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আচরণবিধির ধারা-উপধারা লঙ্ঘন করলে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ক্ষেত্রে সাজা আগের মতো ছয় মাসই রয়েছে।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, বিগত বছরগুলোতে সাধারণত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হতো। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসহ যেকোনো ব্যক্তি মতামত দিতে পারবেন।