দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরও জনগণের সব আশা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, এই অভ্যুত্থানের পর আমাদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। কিন্তু এখনো সেই পুরনো সিস্টেম ও দখলদারিত্ব ফিরে আসার চেষ্টা চলছে।”

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে নীলফামারী শহরে শহীদ রুবেল ও সাজ্জাদের কবর জিয়ারত শেষে ও সৈয়দপুরে উর্দুভাষী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এক পথসভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “যদি সব দাবি পূরণ হতো, তাহলে আমাদের নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মাঠে নামার দরকার হতো না। এখনো কোনো দাবি পূরণ হয়নি। শুধু ‘নির্বাচন’ ‘নির্বাচন’ বলে জনগণকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে। আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই, তবে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের আগে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।”

তিনি শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, “যারা শহীদ রুবেল, সাজ্জাদসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছেন, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের মন থেকে আগুন নিভবে না।”

সংবিধান সংস্কারের দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “বর্তমান সংবিধান আসলে আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদের দলীয় দলিল। এটি জনগণের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন একটি জনগণের সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।”

পথসভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “অভ্যুত্থান শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়। ফ্যাসিবাদী উৎপাদনের পথ বন্ধ করতে হবে। নতুন সংবিধান ও প্রশাসনিক সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”

সভায় বক্তারা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘‘তাদের রক্তের বিনিময়ে একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’’ এ সময় আগামী জুলাইয়ের পদযাত্রায় অংশ নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তারা।

পথসভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপি জেলা আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা সারজিস আলম, আবু সাইদ লিওনসহ অন্যান্য আঞ্চলিক নেতারা।

নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, “আমাদের ওপর বারবার হামলা চালানো হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। হামলা করে নতুন রাজনীতিকে দমন করা যাবে না।”

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “যদি অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের সঙ্গেই এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে দেবে?”

এনসিপির নেতারা জানান, পদযাত্রার মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি ও গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন জোরদার করা হবে।