গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনায় বিএনপি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় এমন দাবি উঠে এসেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই মতামত আসে।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্ব সভায় অংশ নেয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সভা শেষে দেওয়া বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় গতকাল গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সভায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহতের ঘটনায় বিএনপি গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে। এই হামলাকে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয় সভায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটায়। ফলশ্রুতিতে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়। যা এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবার নীলনকশা বলে মনে করা হয়। এই প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে।
সভায় নেতারা আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। আজ রাতে আবার স্থায়ী কমিটির সভায় ঐক্যমত্য কমিশনের বৈঠকের বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা হবে।
গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা গণমাধ্যমে শুধুই কথাই বলছেন কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সব ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে।
মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে ‘সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে’ জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও প্রোপাগান্ডা গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে বলে উল্লেখ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের তরুণ জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত যে সব অশ্লীল বক্তব্য গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।