আল-আরাফাহ্ ব্যাংক অফিসে চাকরিচ্যুতদের হামলা, আহত ১৫

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চাকরিচ্যুতদের হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। টানা ছয় দিন ধরে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন চাকরিচ্যুত শতাধিক কর্ম
এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ব্যাংকের প্রধান দপ্তরের কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২৮ জুলাই (রোববার) থেকে চাকরিচ্যুতরা হেড অফিসের প্রবেশমুখে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। অফিসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের। কর্মীদের অনেকে বলপ্রয়োগের অভিযোগও তুলেছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন। চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। মানবসম্পদ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এক হাজার ৪১৪ জন কর্মকর্তার মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে অকৃতকার্য ৫৪৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা মূলত নিয়োগ পেয়েছিলেন পূর্ববর্তী পরিচালনা পর্ষদের সময়ে, যাদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন সময় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ লাবুর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মোহাম্মদ পিয়ারুর মাধ্যমে ক্যাশ অফিসার পদে ১২ লাখ এবং অফিসার পদে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হতো।
ব্যাংক সূত্র জানায়, আন্দোলনকারীদের অনেকেই এস আলম গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিচ্যুত হয়েও এখানে এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এমনকি আন্দোলনের পেছনে গ্যালকো অফিস থেকে তাদের থাকা-খাওয়া ও আর্থিক সহায়তার অভিযোগও উঠেছে।
ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, চাকরিচ্যুতরা আমাদের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে হুমকি দিচ্ছেন। অনেকেই কাজ করতে পারছেন না। এটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নয়, এটা জবরদখল।
এ বিষয়ে মিরপুর জোনের পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। তবে ঊর্ধ্বতন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলোতে নজিরবিহীন দুর্নীতি করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এখন মানবিকতার নামে পুরো ব্যাংকিং খাতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।
বিষয়টি মানবিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে আন্দোলনের পেছনে গোষ্ঠীগত প্রভাব থাকায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।