‘জলবায়ু তহবিলের দুর্নীতি প্রতিবেদন উদ্দেশ্য প্রণোদিত’
রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-১৯০) ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি’নামক সেমিনারে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমন মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ভালো কাজে প্রশংসা করার সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের অনেক ভালো কাজ রয়েছে যেগুলোর প্রশংসা তারা করেন না। কিন্তু ছোট ছোট ভুলগুলোকেও তারা বড় আকারে উপস্থাপন করেন।’
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি দাতাদের অর্থে দেশের ভাবমূর্তি বাইরের দেশে খাটো করতে এসব গবেষণা প্রতিষ্ঠান সদা তৎপর। তারা বিভিন্ন ভুল তথ্য উপস্থাপন করে জলবায়ু তহবিলকে বির্তকিত করতে চাই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি (টিআইবি) তাদের প্রতিবেদনে বলেছে জলবায়ু তহবিলের অর্থের বড় অংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তাদের দেয়া তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। তহবিলের মোট ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ে। এটি মোট বরাদ্দের এক শতাংশেরও কম। এমন ভুল তথ্য যে প্রতিবেদনে থাকে সেটা কখনো গবেষণা নির্ভর প্রতিবেদন হতে পারে না।’
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লস অ্যান্ড ড্যামেজ প্রশমনের জন্য অনেকেই জলবায়ু ইন্সুরেন্সের কথা বলছেন। কিন্তু এমন ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে বৈশ্বিক বেনিয়ারা এদেশে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে না পারে।’
সেমিনারে মন্ত্রী চলতি বছর পোল্যান্ডে ওয়ারসাই অনুষ্ঠিত কপ-১৯ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, প্রস্তুতি ও করণীয় সম্পর্কে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ নেগোসিয়েশন টিমের সমন্বয়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, জলবায়ু তহবিল নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন তারা আন্তর্জাতিক ধান্দাবাজ। কিছু ব্যক্তি ও গ্রুপ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত। বিদেশিদের টাকায় নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তারা দেশের ক্ষতি করছেন।
খলীকুজ্জমান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কোন ক্ষতিপূরণের অর্থ দেশে না আসলেও তারা প্রচার করছেন ক্ষতিপূরণের সব টাকা এনজিও’কে দেয়া হয়েছে কিন্তু কোন কাজ করা হয়নি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যে কোন অর্থ আসেনি তা তারা জানেন না। জলবায়ু তহবিলে সরকার বাজেট থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। অন্য কোন দেশের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেনি। দেশের এমন অগ্রগতিকে তারা অস্বীকার করছেন এবং বলছেন সরকার নাকি কিছু করতে অক্ষম। সব সক্ষমতা নাকি শুধু তাদেরই আছে।’
সেমিনারে জানানো হয় ২০২১ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত রোগের কারণে সরকারের খরচ হবে অতিরিক্ত দুই দশমিক আট বিলিয়ন ডলার।
সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ও বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম।
আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএস’র গবেষক ড. আসাদুজ্জামান। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিদারুল আহসান, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. ইকবাল কবির প্রমুখ।
(দিরিপোর্ট২৪/ রানা/ এমডি/ অক্টোবর ১০, ২০১৩)