লুৎফর রহমান সোহাগ, দ্য রিপোর্ট : হাজার বছরের ঐতিহ্যে ভর করে আরও একটি নতুন বছর এখন কড়া নাড়ছে বাঙালির দুয়ারে। ব্যাপক উদ্দীপনায় চলছে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর নানা আয়োজন। পুরাতন বছরের গ্লানিকে বিদায় জানিয়ে বাঙালি সেজেছে নতুন উদ্যমে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি প্রকাশ করছে তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা। রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। মঙ্গল শোভাযাত্রা, র‌্যালি, হালখাতা আর নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধমে বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে সর্বত্র।

দীর্ঘদিন ধরে বাঙালির বর্ষবরণের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে রমনার বটমুল। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না। সোমবার সকাল ৬টা থেকে রমনার বটমুলে শুরু হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

বর্ষবরণের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ১৯৮২ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা আয়োজন করে আসছে মঙ্গল শোভাযাত্রার। এবার ‘জাগ্রত কর উদ্ধত করে নির্ভয় করো হে’ স্লোগান নিয়ে চারুকলা থেকে সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা বের হবে। শোভাযাত্রাটি রুপসী বাংলা মোড় ও টিএসসি প্রদক্ষিণ করে চারুকলায় এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় স্থান পাবে লোকজ ঐতিহ্যের প্রতীক, দুর্দিনের কান্ডারীর প্রতীক, সেীন্দর্যের প্রতীক ও পবিত্রতার প্রতীকের মুখচ্ছবি।

এ ছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশের দীর্ঘতম শোভাযাত্রা বের করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি শোভাযাত্রায় অংশ নিবে পুরান ঢাকার ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। অংশ নিবে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

ঢাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শাহবাগের শিশু পার্কের সামনে এবং ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে থাকবে বৈশাখী অনুষ্ঠান। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই নববর্ষকে বরণ করে নিতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। দিনভর বাঙালি পালাগান, বাউলগান, লাঠিখেলা, সাপখেলা, পান্তা-ইলিশসহ নানা ঐতিহ্যকে ধারণ করবে প্রতিটি অনুষ্ঠান। এভাবেই পুরাতন বছরের গ্লানি, হতাশা, বেদনা সব ভুলে আরও একটি নতুন বছর, নতুন উদ্যমে শুরুর আশায় সারাদেশ।

(দ্য রিপোর্ট/এলআরএস/এমসি/এএল/এপ্রিল ১৪, ২০১৪)