ডব্লিউটিও-র বালি সম্মেলন
৭ ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : ৩ ডিসেম্বর থেকে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও)মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজারসুবিধাসহ ৭টি ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
ডব্লিউটিও-র মন্ত্রী পর্যায়ের নবম সম্মেলনকে সামনে রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে রবিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য জানানো হয়। বাণিজ্য সচিব মাহাবুব আহমেদ এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় জানানো হয়, ৩ থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও’র মন্ত্রী পর্যায়ের নবম সম্মেলনে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি খাতের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। সম্মেলন শেষে গৃহীত হবে ‘বালি প্যাকেজ’।
‘বালি প্যাকেজ’-এ যে ৭টি ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে আছে- স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, রুলস অব অরিজিন, স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে সেবা বাণিজ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত ‘ওয়েভার সিদ্ধান্ত’ বাস্তবায়ন ও কৃষি সংক্রান্ত কিছু বিষয়।
সভায় আরও জানানো হয়, ‘বালি প্যাকেজ’-এ চলমান ‘দোহা রাউন্ড’-এ গৃহীত কিছু বিষয় নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। ‘বালি প্যাকেজ’-এ অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্বাচিত ৭টি ইস্যুর মধ্যে চারটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হচ্ছে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা; সেবা খাতের বাণিজ্যে ‘এলডিসি সার্ভিসেস ওয়েভার’; রুলস অব অরিজিন এবং ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট।
প্রস্তুতি সভায় বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চারটি ইস্যু নিয়ে আলোচনাকালে ‘শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা’ প্রসঙ্গে বলা হয়, ২০০৫ সালে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও’র পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে, সকল উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ (তাদের সামর্থ অনুযায়ী) স্বল্পোন্নত দেশের সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা দেবে। যে সকল দেশ ১০০ ভাগ এ সুবিধা দিতে পারবে না, সে সকল দেশ অন্তত ৯৭ ভাগ পণ্যের ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেবে। কিন্তু এরপর ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
সেবা খাতের বাণিজ্যে ‘এলডিসি সার্ভিসেস ওয়েভার’ প্রসঙ্গে সভায় বলা হয়, সেবা খাতের বাণিজ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অগ্রাধিকার বাজার সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও’র পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ‘এলডিসি সার্ভিসেস ওয়েভার’ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এ সিদ্ধান্তটিও এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
‘রুলস অব অরিজিন’ প্রসঙ্গে সভায় বলা হয়, শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা বা যে কোনো অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা থেকে কার্যকর সুবিধা অর্জনের ক্ষেত্রে রুলস অব অরিজিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি যথেষ্ট সহজ ও শিথিল না হলে প্রাপ্ত সুবিধা কাজে লাগানো সম্ভব হয় না। এ কারণে ‘রুলস অব অরিজিন’ সহজ, স্বচ্ছ ও শিথিল করার লক্ষ্যে একটি সিদ্ধান্ত পাস করানোর জন্য বাংলাদেশ ও এলডিসি গ্রুপ কাজ করছে বলে সভায় জানানো হয়।
‘ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট’ প্রসঙ্গে সভায় বলা হয়, ডব্লিউটিও’র আওতায় এ সংক্রান্ত একটি পৃথক চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চলছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণিজ্য সম্পাদনের সময় ও ব্যয় কমিয়ে এনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি আধুনিক ও উন্নত ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন ব্যবস্থা কার্যকর করা।
(দিরিপোর্ট২৪/এসআর/এইচএস/এমডি/নভেম্বর ১৭, ২০১৩)