দুই কন্যার গল্প
দিরিপোর্ট ডেস্ক : দুই নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জমে উঠেছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রবিবারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রধান দুই প্রার্থী হলেন সমাজতন্ত্রী মিচেলে ব্যাচেলেত ও ডানপন্থী ইভেলিন মাথেই।
এই অঞ্চলে এক সময় রাজনীতি শুধুমাত্র পুরুষেরই বিষয় ছিলো। কিন্তু সে অবস্থা বদলে দিলেন এই দুই নারী। আবার তাদের মাঝে অবাক করা কিছু মিলও আছে। তারা একই স্কুলে পড়েছেন। খেলাধূলা করেছেন একইসঙ্গে। আবার তাদের দুইজনের বাবা ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একইসঙ্গে চাকরি করেছেন চিলির বিমান বাহিনীতে। কিন্তু ১৯৭৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দুইজনকে নিয়ে যায় দুই পথে।
অনেকে বলছেন তাদের অতীত ও বর্তমান যেন ল্যাটিন আমেরিকার সোপ ওপেরা বা জাদু বাস্তব উপন্যাস। এমনই কাহিনী নাকি গ্যাবিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ বা ইসাবেল আলেন্দের উপন্যাসে মেলে।
তারা ১৯৫৮ সালে দক্ষিণ চিলির আতাকামা মরুভূমির মিলিটারি বেসে থাকতেন। তারা একই রাস্তার মুখোমুখি চার ও তের নাম্বার বাড়িতে থাকতেন। তখন ব্যাচেলেতের বয়স সাত ও ম্যাথেইয়ের বয়স ছিলো পাঁচ। এইসব ঘটনা নিয়ে ‘ডটার্স অব জেনারেলস’ নামে একটি বইও প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু সুসম্পর্কের মাঝে বাধা হয়ে দাড়ায় দুই জনের বাবার রাজনৈতিক বিশ্বাস। মি. ব্যাচলেত ছিলেন বামপন্থী, যিনি ১৯৭৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন। অন্যদিকে ডানপন্থী হওয়ার কারণে মি. ম্যাথেইয়ের সমৃদ্ধি দিনদিন বাড়তে থাকে। অনেকে বন্ধুকে সমর্থন না করার কারণে মি. ম্যাথেইকে দায়ি করেন।
১৯৯০ এর দশকে ব্যাচেলেত ও ম্যাথেই দুজনেই রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০০৬ সালে ব্যাচেলেত চিলির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
বর্তমানে ম্যাথেই তার বাবার পুরানো বাসায় থাকেন, যেখানে মি. ব্যাচেলেত ১৯৬০ এর দশকে বেড়াতে যেতেন। ওই বাড়ির উঠোনে এখনো আছে মি. ব্যাচেলেতের উপহার দেয়া দুটি জলপাই গাছ।
ডটার্স অব জেনারেলস বইয়ের সহলেখক রোকিও মন্তিস দুই পরিবারের এই বিচ্ছেদ নিয়ে বিবিসিকে বলেন, আমাদের উপসংহার হলো এটি শুধুমাত্র কাকতালীয় কোন ঘটনা নয়। এই হলো ১৯৭৩ সালে যা ঘটেছে তার ফলাফল। এই রাষ্ট্র দুইভাগে বিভক্ত। পরিবার বিভক্ত। বন্ধুত্বও বিভক্ত।
(দিরিপোর্ট/ডব্লিউএস/এমডি/নভেম্বর ১৭, ২০১৩)