শরীয়তপুরে এসএসসি’র ফরম পুরণে অতিরিক্ত ফি আদায়
শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। এ বছর ফরম পুরণে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়।
জেলা শহরের আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পালং উচ্চ বিদ্যালয়, নাগেরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, ইদিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ভোজেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ও জাজিরা মোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয় বোর্ডের নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ফরম পূরণের জন্য নির্ধারিত ১ হাজার ২শ’ ৪০ টাকার স্থলে ৪ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে।
শরীয়তপুর জেলার ১১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৫টি দাখিল মাদ্রাসার প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করছে। চলতি বছর ফরম পূরণে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার ২ শ’ ৪০ এবং মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের জন্য ১ হাজার ১ শ’ ৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে শিক্ষা বোর্ড। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ক্লাস (কোচিং) ফি যুক্ত করে বিভিন্ন বিদ্যালয় ফরম পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৮শ’ টাকা থেকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা আদায় করলেও শরীয়তপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে গলাকাটা ফি আদায় করা হচ্ছে। ফরম পূরণের জন্য ৪ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বাধ্য করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে ছাড় পাচ্ছেনা গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরাও।
গোসাইরহাট উপজেলা সদরের ইদিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী জাহিদ হোসেন শুভ, শাহিন আহমেদ রাজু, নাগের পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সজীব জানান, তারা সকলেই ফরম পুরণের জন্য ৩ হাজার ৭শ’ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা করে জমা দিয়েছে।
জেলা সদরের আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী হামিদা লিজা বলেন, ‘আমার বাবা একটি রিক্সা গ্যারেজে কাজ করে। আমি ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছি। এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার কাছ থেকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা দাবি করলে আমার বাবা খুব কষ্ট করে ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন।’
একই বিদ্যালয়ের অপর পরীক্ষার্থী আরিফ হোসেনের মা কহিনুর বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে খারাপ করেছে। সে জন্য প্রধানশিক্ষক আমার ছেলের ফরম পুরণে ১৫ হাজার টাকা দাবি করলে আমি প্রথমে ৮ হাজার টাকা দেই। কিন্তু প্রধানশিক্ষক তা না নিয়ে টাকা ছুড়ে ফেলে। পরে অনেক কাকুতি-মিনতি করে ১২ হাজার টাকায় ফরম পুরণে রাজি করাই।
এ ব্যাপারে আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার কামাল বলেছেন, পরীক্ষার্থীদের বকেয়া পাওনা, ২ মাসের কোচিং ফিসহ কিছু অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। এটা শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত মতেই গ্রহণ করা হচ্ছে।
শরীয়তপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নলিনী রঞ্জর রায় জানান, শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ধার্যকৃত অর্থের অতিরিক্ত কেউ গ্রহণ করতে পারবে না। এর অতিরিক্ত আদায় করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরাই এজন্য দায়ী থাকবেন।
(দিরিপোর্ট/এমএএইচএস/এসকে/নভেম্বর ১৮, ২০১৩)