বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে প্রতি তিনদিনে একজন আত্মহত্যা করছেন। গত ১৬ মাসে জেলায় আত্মহত্যা করেছেন একশ ৬৮ জন। এর মধ্যে ফাঁস লাগিয়ে একশ ৩৮ জন, বিষপানে ৩৮ জন এবং গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছয়জন।

সর্বাধিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ২০১৩ সালের আগস্টে। এ মাসে আত্মহননকারী ছিল ১৯ জন। এর মধ্যে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছে ১৬ জন, বিষপানে তিনজন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা নিয়মিত মামলা ও ইউডি মামলা সূত্রে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘আত্মহত্যার প্ররোচণাকারীর বিরুদ্ধে আইনের ধারা থাকলেও পর্যাপ্ত সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে এ মামলা প্রমাণ করা কঠিন। অথচ পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ একজন এগিয়ে আসলেই প্রতিটি আত্মহত্যার পেছনের কারণ উদঘাটন ও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।’

মনোবিজ্ঞানী ডাক্তার জসিম উদ্দিন জানান, হতাশা ও মানসিক নির্যাতনের কারণে একজন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মহত্যার পেছনে এক বা একাধিক মানুষের প্ররোচণা থাকে।

প্রাক্তন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এরশাদুল ইসলাম সুমন জানান, পুলিশ ইচ্ছে করলেই দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারামতে আত্মহত্যার প্ররোচণাকারীদের শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিতে পারে। কিন্তু নানা কারণেই পুলিশ তা করতে চায় না। কারণ হিসেবে তিনি আরও জানান, আত্মহননকারীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে সহযোগিতা না করার কারণে পুলিশ উদ্যোগী হয়ে ৩০৬ ধারার মামলা নিতে চায় না।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) বাবুল আকতার জানান, আত্মহত্যার প্ররোচণায় মামলা খুব একটা দেখা যায় না। পরিবার থেকে উদ্যোগ না নিলে এ মামলা প্রমাণ করা খুবই কঠিন।

(দ্য রিপোর্ট/কেএইচএস/একে/এএল/এপ্রিল ২০, ২০১৪)