গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে ২ শ্রমিক নিহত, আহত ২৫
গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিককে মারধরের বিচার দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। কারখানা গেটে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে দুই শ্রমিক নিহত এবং কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর শিল্পাঞ্চলের সারদাগঞ্জ এলাকায় সোমবার বিকেলে জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শ্রমিকরা জানান, জিএমএস কম্পোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সুইং সেকশনের এক নারী কর্মীকে কারখানার ব্যবস্থাপক (উৎপাদক) মারধর করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঘটনার বিচার দাবি করে। তারা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালায়। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানার গেট খুলে দিলে শ্রমিকরা বাইরে এসে বিক্ষোভ করে।
এ সময় পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। শ্রমিকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং আশপাশে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে রুমা আক্তার (২২) নামে এক নারী শ্রমিক ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওই কারখানার প্যাডন মাস্টার বাদশা মিয়াসহ কমপক্ষে ২৫ শ্রমিক আহত হন।
গুলিবিদ্ধ বাদশা মিয়াসহ ১৬ জনকে সাভার এনাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক জাহিদুর রহমান জানান, আহতদের মধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ বাদশা মিয়া (২৫) হাসপাতালে আনার পথেই মারা যান। এছাড়া মাথায় ও চোখে গুলিবিদ্ধ ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকি ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে।
নিহত বাদশা ফরিদপুরের কোতোয়ালি উপজেলার চরমাগদিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। রুমা আক্তার রংপুর জেলা সদরের কাউনিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ও জয়দেবপুর থানাধীন চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, রুমার স্বামীর কাছে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি টহল দিচ্ছে। গত ৩ দিন ধরে গাজীপুরের কোণাবাড়ি, জরুন, সাতাইশ, নাওজোড় এলাকায় সোয়েটার ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা তাদের উৎপাদন মজুরি বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
(দিরিপোর্ট/এমএমএফ/এনডিএস/এমএআর/নভেম্বর ১৮, ২০১৩)