বাহরাম খান, দিরিপোর্ট : মহাজোটে থাকা ৪টি দলের সমন্বয়ে সদ্য বিদায়ী মহাজোট সরকার গঠন করা হয়েছিল। সোমবার নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে মহাজোটের ৫টি দলের সমন্বয়ে।

নির্বাচনকালীন সরকারে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ ও সাম্যবাদী দলের সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এই দল থেকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাশেদ খান মেনন। সদ্য গত সরকারের সময়ে একবার মন্ত্রিত্বের আহ্বান উপেক্ষা করেছিলেন তিনি।

সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী মহাজোট সরকারের অধীনেই নির্বাচনের কথা বলে আসছিল। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেন। সেই সরকারে বিরোধী দলের অংশগ্রহণের কথাও বলেছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী সোমবার পর্যন্ত নির্বাচনকালীন সরকার গঠন যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে তাতে কি এই সরকারকে সর্বদলীয় সরকার বলা যাবে? নাকি এটি মহাজোট সরকারের নতুন সংস্করণ?

বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক দিরিপোর্টকে বলেন, ‘এই সরকারকে কোনোভাবেই সর্বদলীয় সরকার বলা যায় না। কারণ যে সরকারে দেশের প্রধান বিরোধী দল অংশগ্রহণ করে না সেটা সর্বদলীয় সরকারের রূপ পায় না।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়া দিরিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা সর্বদলীয় সরকারই গঠন করেছি। এতে কোনো সমস্যা দেখছি না।’ প্রধান বিরোধী দল যোগদান না করলে সর্বদলীয় সরকার বলা যায় কী-এমন প্রশ্নের উত্তরে দীলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘সর্বদলীয় সরকারে যোগদান করা বিএনপির দায়িত্ব। তাছাড়া সময় তো শেষ হয়ে যায়নি। এই মুহূর্তে শেষ কথা বলা যাবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে.জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখানে মহাজোটের বাইরে নতুন কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব নেই। এই সরকার মহাজোট সরকারের নতুন সংস্করণ। প্রধান বিরোধী দল যেখানে নেই সেটা সর্বদলীয় সরকার কীভাবে হয়?’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘সর্বদলীয় সরকার নামে এই সরকার গঠন করা হয়েছে। তাই একে সর্বদলীয় সরকার না বলার কোনো কারণ নেই।’

যে সরকারে প্রধান বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেনি সেটাকে সর্বদলীয় সরকার বলতে অনেকে নারাজ। এরকম প্রশ্নের উত্তরে সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘আমার একটি নাম আছে। সেই নামে যদি কেউ আমাকে ডাকতে না চায় সেটা তার ব্যাপার। তাই বলে তো আমার নাম পাল্টানো যাবে না।’

অবশ্য সোমবার বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নতুন সরকারের মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বিএনপি যদি এই সরকারে যোগদান করে তাহলে ‘সর্বদলীয়’ সরকার হবে। আর বিএনপি না আসলে ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার হবে।”

(দিরিপোর্ট/বিকে/ এমডি/এইচএসএম/নভেম্বর ১৮, ২০১৩)