শিক্ষাখাতে এডিবির টাকা ছাড় শিগগিরই
জোসনা জামান, দিরিপোর্ট : মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিশ্রুত ৪ হাজার কোটি টাকার প্রথম কিস্তি ছাড় হচ্ছে শিগগিরই। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সরকারের সঙ্গে সংস্থাটির ৭২০ কোটি টাকার (৯ কোটি মার্কিন ডলার) একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
মাল্টি ট্রান্স ফাইনান্সিং ফ্যাসিলিটির (এমএফএফ) আওতায় এ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে এডিবি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং এডিবির পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর এম. তেরেসা খো।
এডিবির ঢাকা অফিস জানায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে এডিবির একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বাংলাদেশ সফর করে। তারা এমএফএফর বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা। সরকারের সম্মতি পাওয়ার পরই বিভিন্ন খাতে এমএফএফ পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, সরকার ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দশ বছর মেয়াদে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন শীর্ষক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে নতুন এমএফএফ পদ্ধতির আওতায় চার কিস্তিতে এডিবি ঋণ দিচ্ছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা (৫০ কোটি মার্কিন ডলার)। মোট অর্থ থেকে প্রথম কিস্তির ৭২০ কোটি টাকার চুক্তি হবে বৃহস্পতিবার। দ্বিতীয় কিস্তিতে ৮০০ কোটি টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা পরে ছাড় করা হবে।
প্রথম কিস্তির অর্থ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল মেয়াদে কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজে ব্যয় করা হবে। সহজ শর্তের এ ঋণ ৫ বছরের গ্রেস প্রিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এর সুদের হার ২ শতাংশ।
এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব সাইফুদ্দিন আহমেদ দিরিপোর্টকে জানান, শিক্ষাখাতে এমএফএফ পদ্ধতির আওতায় এডিবির এটি প্রথম ঋণ। এর আগে এডিবি একই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ও রেলখাতে অর্থায়ন করেছিল। এ পদ্ধতির ফলে দাতারা যৌথভাবে সরকারের গৃহীত কর্মসূচিগুলোতে অর্থায়ন করবে। তিন ধাপে অর্থছাড় করবে অংশগ্রহণকারী দাতারা। ফলে আগে থেকেই জানা যাবে দাতারা কোন সময় এবং কত টাকা ছাড় করবে। এর ফলে প্রকল্পের গতি বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি সরকারকে আর অহেতুক কমিটমেন্ট চার্জ গুনতে হবে না।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে আরো জানা যায়, এর আগে বিদ্যুৎখাতে এমএফএফ পদ্ধতির আওতায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক মাল্টি ট্রান্স ফাইনান্সিং ফ্যাসিলিটি পদ্ধতিতে চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র সংস্কারের জন্য ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
ইআরডির সাম্প্রতিক এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। এর পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া ৩৩৭টি প্রকল্পের বিপরীতে কারিগরি সহায়তা মঞ্জুরি হিসেবে ২০ কোটি ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছে তারা। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে রেয়াতি সুবিধায় সর্বাধিক ঋণ গ্রহণকারী দেশেসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
(দিরিপোর্ট/জেজে/এমএআর/এমডি/নভেম্বর ১৯, ২০১৩)