হাসান শাওন, দিরিপোর্ট : সময় পেয়েছেন মাত্র ৪৫ বছর। এর মধ্যেই সৃষ্টিশীলতার আচড়ে সঞ্জীব চৌধুরী স্পষ্ট চিনিয়েছেন নিজের জাত। কবি টোকন ঠাকুরের ভাষায় ‘পোশাকী সিস্টেমের দেশে নিজের অস্তিত্বের স্বাধীনতা ঘোষণা’ করেছিলেন তিনি।

এক সঞ্জীবের ভেতর কী ছিলনা। সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার, সাংবাদিক, কবি, রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু সব শেষে যেন একাই থাকতেন নিজের মত, নিজের জগতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র সঞ্জীব চৌধুরী সেটেল লাইফের সিড়ি বেয়ে নিজেকে সুরক্ষিত করেননি। না পপস্টারের স্টারডম, বিরাট সাংবাদিকের ঠাটবাট, গাড়ি, ফ্লাট বিত্তের দাপট. . .। কিছুই ছিল না তার ভেতরে। আওলা বাতাসের সঙ্গেই যেন আসল প্রেম . . .।

নব্বইয়ের দশক। সে এক সময় বটে! সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শেষে কত লোকই পেল কত কি। সঞ্জীব পেলেন কী? বাংলাদেশের ফুলে ফেপে ওঠা মিডিয়ায় তৈরি করলেন নিজের একান্ত ফিচার জগত। সেখান থেকেই নিজস্ব ধারার দলছুট গানে। কিন্ত গান কি বিরাট স্টার বানালো সঞ্জীবকে। কোথায়? সেই তো রাস্তায় পাশের টং দোকানে একান্ত বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। যে কেউ ডাকলেই কনসার্টে যাচ্ছেন। এক সময়ে যিনি জনসমুদ্র শ্লোগানে ভাসাতেন এখন গানে- এই মাত্র তফাত।

গানের সঞ্জীবের কথাও একটু বলা দরকার। ব্যান্ড সঙ্গীতের নামে অনর্থক উচ্চমাত্রার শব্দ উৎপাদনে হচ্ছিল দেশে। তখন সঞ্জীব-বাপ্পার দলছুট গড়া। নাগরিকদের টিনের চশমার সামনে শাহ আবদুল করিমকে উন্মোচন করে দলছুট।

সংবাদপত্রের সঞ্জীবও একই রকম চিরঞ্জীব। তার মেধা নিসৃত ধারায় এখনও চলছে বাংলাদেশের ফিচার বিভাগের দৈনিক বর্ণাঢ্য আয়োজন। পাঠককে দূরে না রেখে কাগজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এই মানুষেরই আইডিয়া। এখন যে ধারায় চলছে নানা মাধ্যমে ‘কমিউনিকেটিভ’ করার চেষ্টা।

না থাকার পরও এই ৬ বছরে সঞ্জীব চৌধুরী অনেকভাবেই থাকেন। এই ‘মন খারাপের দেশের মানুষ’ এলোমেলো হয় তার প্রভাবে। আউলা বাতাসের কীর্তি এখানেই।

(দিরিপোর্ট২৪/এইচএস/এইচএসএম/নভেম্বর ১৯, ২০১৩)