তারেকের জন্মদিন : কেক কাটলেন খালেদা জিয়া
দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মদিন বুধবার। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান ১৯৬৫ সালের এইদিনে জন্মগ্রহণ করেন।
দিনের শুরুতে অর্থাৎ রাত ১২টার পরপরই গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে কেক কেটে ছেলের জন্মদিন পালন করেন খালেদা জিয়া।
এ সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতা, ছাত্রদল, যুবদল ও মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জন্মদিনটি সুদূর প্রবাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পালন করতে হচ্ছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে পিতৃহারা তারেক রহমান দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবিতে পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হন এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন তিনি।
ছাত্রজীবন শেষে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তারেক রহমান। বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগ করেন এবং স্বল্প সময়ে ব্যবসায় সফলতা পান। পরে তিনি নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করেন ও সাফল্য অর্জন করেন।
পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক রহমান তার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসেবে সারাদেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও মায়ের পাশাপাশি তিনিও দেশব্যাপী নির্বাচন প্রচারণা চালান। মূলত এ প্রচারণায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতির প্রথম সারিতে তার আগমন ঘটে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০২ সালে তারেক রহমানকে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পরপরই বাবা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার আলোকে তিনি দেশব্যাপী দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেন।
মূল সংগঠন ছাড়াও জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তারেক রহমান। তিনি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্যের পাশাপাশি তাদের বক্তব্য শোনেন ও মতামত গ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে তিনি তরুণদের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তাকে সংগঠনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ একটি দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে তারেক রহমানকে তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে আরও ১৩টি দুর্নীতির মামলা করা হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার তাকে গ্রেফতার করে নির্মম নির্যাতন করে। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলে তার বিরুদ্ধে আরো মামলা দায়ের করা হয়। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলার রায় হয়েছে। এই মামলায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বর্তমানে লন্ডনের সাউথ ওয়েলিংটন ও লন্ডন হসপিটালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে সপরিবারে বাস করছেন।
এবারও এই তরুণ রাজনীতিকের জন্মদিনটি সুদূর প্রবাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পালন করতে হচ্ছে। জন্মদিনে মা খালেদা জিয়া, ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো কাছে নেই। নেই ঘনিষ্ঠ স্বজনরা। তার সঙ্গে আছেন সহধর্মিণী ডা. জুবায়দা রহমান ঝুনু ও একমাত্র কন্যা জায়মা রহমান।
(দিরিপোর্ট/টিএস/এমএইচ/এমএআর/নভেম্বর ২০, ২০১৩)