‘শ্রমিক অসন্তোষে জড়িতদের তালিকা করার নির্দেশ’
দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে জড়িতদের তালিকা করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে র্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু।
সচিবালয়ে বুধবার পোশাকখাতে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী রাজু বলেন, আমি র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের ডিআইজিকে বলবো তাদের গোয়েন্দা বিভাগ যেন খুঁজে বের করে কারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। বিশৃঙ্খলা করে আমাদের পোশাকখাত ভারতের হাতে, বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। সে যত বড় নেতাই হোক।
বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রমমন্ত্রী বলেন, পোশাকশিল্প ধ্বংস হয়ে গেলে আপনাদের ভাইরা, বোনরা কোথায় যাবে।
তিনি বলেন, দেশটা আপনার আমার সবার। তাই দায়-দায়িত্ব আমাদের সবার। আপনারা শিল্প ধ্বংস করবেন আর সরকার চোখ বন্ধ করে বসে থাকবে, তা কিন্তু হবে না।
শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে রাজু বলেন, মাঝে মাঝে আমার মনে প্রশ্ন জাগে সত্যি আপনাদের পেছনে শ্রমিকরা আছেন কি না। নাকি আপনারা কাগজে কলমে নেতা। সত্যিকারভাবে শ্রমিকরা আপনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকতো তবে এ গণ্ডগোলগুলো সৃষ্টি হয় না।
শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘মন্টু সাহেব আপনার কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি। আপনি শান্ত হোন, সবকিছু মেনে নেন।’
এ সময় মন্টু ঘোষ কিছু বলতে গেলে মন্ত্রী বলেন, না আপনাকে কোন কথা বলার সুযোগ আমি দেব না। সব খবর আমাদের কাছে আসে।
ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা কম নয় মন্তব্য করে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, বড় কারখানাগুলো হয়তো এ টাকা দিতে পারবে। কিন্তু খিলগাঁও, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা ছোট ছোট কারখানার দিতে পারবে না।
শ্রমসচিব মিকাইল শিপার সাংবাদিকদের বলেন, মূল বেতন ৩ হাজার টাকা ধরে ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা চূড়ান্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়ই এটা করা হয়েছে। মজুরি বোর্ড ঘোষিত মূল বেতন ৩ হাজার ২০০ টাকার দাবি থেকে সরে আসার জন্য তাদের বলা হয়েছে। আশা করি তারা এটা মেনে নেবেন। আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে গত কয়েকদিনে আশুলিয়া, গাজীপুর ও সাভারের অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
মালিক, শ্রমিক ও সরকারের দরকষাকষির মধ্যে ৫ নভেম্বর এক সভায় পোশাক শ্রমিকদের জন্য পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে মজুরি বোর্ড। প্রথমে এ মজুরি না মানলেও পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে এ মজুরি মেনে নেন মালিকরা।
ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন পোশাকশ্রমিকরা। পোশাক কারখানা মালিকরা মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
(দিরিপোর্ট২/আরএমএম/ এসবি/নভেম্বর ২০, ২০১৩)