‘কেমো থেরাপিই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ’
দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘দেশের বর্তমান সংকট কুইনাইন দিয়ে সারবে না। একমাত্র কেমো থেরাপিই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ। ইতিহাসে নিজের নাম কিছুটা টিকিয়ে রাখতে হলে এখনই নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃসংযোজন করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করুন।’
সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শামিল হয়ে বর্তমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার রাত সাড়ে সাতটায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আমরা মনে করি ফখরুলকে গ্রেফতার করা সরকারের নগ্ন প্রতিহিংসার বহির্প্রকাশ। শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই নয়, প্রতিপক্ষের আইনজীবীকে গ্রেফতার করে সরকার তার অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে সব বাধাকে নির্মূল করতে চাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করেন তিনি।
এর আগেও ফখরুলকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নিয়েছিল অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘তার অফিসের কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুলিশ সে সময় জব্দ করে। আমি সরকারের হিংস্র আচরণের শিকার ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
সর্বদলীয় সরকারের উসিলায় আবারও বাকশাল চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা জনগণের ক্ষমতাকে গুম করে নিজের অধীনে নির্বাচন করে দীর্ঘ সময়ব্যাপী ক্ষমতায় থাকার আনন্দে যা ইচ্ছে তাই করছেন। বিদ্যমান সংকটকে নিরসন না করে তিনি ধমকের জোরে বিরোধী কণ্ঠকে দমাতে চাচ্ছেন। প্রতিদিন সরকারি সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জনসভায় বিরোধী দল এবং বিরোধীদলীয় নেত্রীর বিরুদ্ধে লাগামহীন কুৎসা, মিথ্যাচার ও শাস্তির হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আর এ সমস্ত দাম্ভিকতা তিনি দেখাচ্ছেন বাংলার মসনদকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। বাংলার মসনদে স্বৈরাচারীরা কখনোই টিকতে পারেনি এটা তার মনে রাখা উচিত।’
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের বর্তমান শাসনামল পৃথিবীর যেকোনো স্বৈরাচারীর নিষ্ঠুরতার ইতিহাসকেও হার মানায়। কেবলমাত্র বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার নয়, সরকারের পুলিশ বাহিনী রিমান্ডে নিয়ে অমানসিক নির্যাতনের পর তাদেরকে হত্যা করছে।’
ঢাকা মহানগর ৬২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার এবং তার ওপর নির্দয় নির্যাতন চালানো, পরবর্তীতে জেলহাজতে তার মৃত্যু সবই বিরোধী দল বিনাশের ধারাবাহিক ঘটনা। সরকারি বাহিনী শাহাবুদ্দিনকে হত্যা করেছে অভিযোগ করে তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছা পূরণে সর্বত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বৃত্তপনার মাত্রা এতোটাই বেড়েছে যে, দেশটি ভদ্রলোকদের জন্য অবাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। এ সরকারের দুর্বৃত্তপনার কারণেই আইন-প্রশাসনিক-বিচারিক ব্যবস্থা ভয়াবহ রকম ভেঙে পড়েছে।’
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবকে গ্রেফতারের পর দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড নেওয়ায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ধারাবাহিক নির্যাতনের একটি অমানবিক দৃষ্টান্ত। এটি সরকারের প্রতিহিংসা। তরুণদের শিহরিত করার জন্য, ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ এ নির্যাতনের কৌশল বেছে নিয়েছে।’
(দিরিপোর্ট/এমএইচ/টিএস/এনডিএস/নভেম্বর ২০ ,২০১৩)