দিরিপোর্ট ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস বৃহস্পতিবার এক সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে বলে উল্লেখ করেছে। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে যদি এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশটির উপর আন্তর্জাতিক চাপ এমনকি নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো বিষয় ঘটতে পারে।

সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের উপর স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করার কথাও বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানি না করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধান করে একটি সর্বসম্মত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা গ্রহণ করা উচিত।

বাংলাদেশে এই অচলাবস্থার জন্য সম্পাদকীয়টিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা জানাচ্ছে যে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আর এ জন্য তিনি যেকোনো উপায়ে বিরোধী দলকে দমন করতে চান। এ লক্ষ্যে ২০১১ সালে তিনি সংবিধান সংশোধনও করেন। সেখানে তিনি সংবিধান থেকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। এর বদলে তিনি তার নেতৃত্বে একটি ‘সর্বদলীয় সরকার’ গঠনের জন্য সংবিধানে একটি ধারা যোগ করেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার কাছে নির্বাচনকালীন এই সরকার ব্যবস্থা অগ্রহণযোগ্য। ফলে দেশকে অচলাবস্থার দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এই দুই দল।

এই সম্পাদকীয়তে বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেরও সমালোচনা করা হয়েছে। তারা বলছে, এই ট্রাইব্যুনালকে বিরোধী দল দমনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া এই ট্রাইব্যুনালের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিরোধী দলের নেতা।

এদিকে জামায়াতে ইসলামীকে আগামী নির্বাচনে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সম্পাদকীয়তে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বিএনপির অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থকই মনে করেন ইসলামী দলগুলো দেশের ভিত্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। কিন্তু জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কারণে দলটির সমর্থকরা বরং রাস্তায় নেমে এসেছে।

অন্যদিকে সম্পাদকীয়তে এ বছর রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে বাংলাদেশের টালমাটাল অবস্থার কথাও উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, লাগাতার হরতালের কারণে বাংলাদেশের অবস্থা একেবারে নাজেহাল হয়ে গেছে। এ সময় রাজনৈতিক সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। বিরোধী দলের শীর্ষ কয়েক নেতাসহ মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া না মেনে এ সময় শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড প্রদানের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে বলা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে।

(দিরিপোর্ট/আদসি/এএস/নভেম্বর ২১, ২০১৩)