জালিয়াতচক্র নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা
ঢাবি ক-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার
ঢাবি সংবাদদাতা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ক ইউনিটের ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা ২২ নভেম্বর (আগামীকাল)শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১:৪৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের মোট ৭৭টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
ইতোমধ্যে পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। আসন বিন্যাস পাওয়া যাবে http://admission.eis.du.ac.bd এই ঠিকানায়। এছাড়াও গ্রামীণফোন ছাড়া যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকেও আসন বিন্যাস দেখা যাবে। এ ক্ষেত্রে DUGARoll no লিখে পাঠাতে হবে ১৬৩২১ নম্বরে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মোঃ আশরাফ আলী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে ৬৪টি কেন্দ্র্রসহ মোট ৭৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার সিটপ্ল্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ডিজিটাল জালিয়াতচক্র সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। মাত্র তিন লাখ টাকা খরচ করলেই ভর্তির সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে এমন লোভ দেখিয়ে শিক্ষার্থী জোগাড় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জালিয়াতচক্রের সদস্যরা। অসংখ্য ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে এরকম অফার দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভর্তিচ্ছু জানায়, আমার মুঠোফোনে অপরিচিত নম্বর থেকে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। যেখানে লেখা ছিল টাকার বিনিময়ে আমি ঢাবিতে ভর্তি হতে চাই কি না। কিন্তু ফোন দিলে নম্বরটি বন্ধ পাই।
উল্লেখ্য, গত খ, গ ও ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার হলে জালিয়াতির অভিযোগে মোট ৯ জনকে আটক করেছিল পুলিশ। এছাড়া ঢাবির কলাভবন থেকে সন্দেহের ভিত্তিতে সাতটি মোবাইল ঘড়িও আটক করা হয়।
অপরদিকে আগামীকালের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ আলী জারিয়াতি চক্র সম্বন্ধে বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কারণে এমনটি করা সম্ভব হচ্ছে। এই চক্রকে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। তবে এসএমএস প্রক্রিয়া এক ঘণ্টা বন্ধ রাখতে পারলে হয়তো এই চক্রটিকে ব্যর্থ করা যেতো। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক ইউনিটের পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ও কলা অনুষদের ডিন বলেন, প্রতিবছর এরকম খবর আমরা শুনি। তবে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
ডিজিটাল জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত আছে এমন কোনো আলামত দেখলে তা অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জালিয়াতি মোকাবিলার চেষ্টা করবো। এর সঙ্গে ভর্তিচ্ছুকদের সহযোগিতাও কাম্য। পরীক্ষার হলে মোবাইল, ঘড়ি মতো দেখতে মোবাইল কিংবা যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র আনতে নিষেধ করেন তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ইতোমধ্যে ঘ খ ও গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার হল থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে এসএমএস বন্ধ করার বিষয়ে কথা বলেছি। সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেয়ার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে প্রশাসন প্রস্তুত আছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ছাত্র-ছাত্রীসহ সংশিষ্ট সকলের পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন ও যে কোন ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস (যেমন ক্যালকুলেটর, আই পড ইত্যাদি) বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
(দিরিপোর্ট/জেএইচ/এপি/এমডি/নভেম্বর ২১, ২০১৩)