পৃথক হলো স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা
নূরুজ্জামান তানিম দিরিপোর্ট : ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের লক্ষ্যে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সনদ (সার্টিফিকেট) পেয়েছে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। ঢাকা ও চট্টগ্রামের যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্ম সমূহের পরিদফতরের (আরজেএসসি) পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথকভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।
ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক হয়ে গেল।
এ বিষয়ে ডিএসইর সহ-সভাপতি মো. মিজানুর রহমান খান দিরিপোর্টকে বলেন, ‘দ্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অ্যাক্ট, ২০১৩ অনুসারে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্নের অংশ হিসেবে ডিএসই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সনদ পেয়েছে। ফলে আজ থেকেই ডিএসইকে পূর্ণাঙ্গ ডিমিউচ্যুয়ালাইজড বলা যাবে।’
এ বিষয়ে সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ সাজিদ হোসেন দিরিপোর্টকে বলেন, ‘চট্টগ্রামস্থ আরজেএসসি অফিস কর্তৃপক্ষ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সার্টিফিকেট দেবে বলে আজ সকালে জানায়। সিএসইর পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট আনতে লোক পাঠানো হয়েছে। শুনেছি ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়েছে। সার্টিফিকেটের তারিখ অনুযায়ী অর্থাৎ আজ থেকেই ডিমিউচ্যুয়ালাইজড হলো সিএসই।’
এদিকে সকালে ডিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. স্বপন কুমার বালা দিরিপোর্টকে বলেন, ‘ডিএসইর কর্মকর্তারা আরজেএসসি থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের সার্টিফিকেট আনতে গেছে। সার্টিফিকেটের তারিখ অনুযায়ী ডিএসই ডিমিউচ্যুয়ালাইজড বলে ঘোষিত হবে।’
জানা গেছে, সম্প্রতি ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুমোদন করে বিএসইসি। স্কিম অনুসারে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৫ অক্টোবর সিএসই এবং ২ নভেম্বর ডিএসই বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) সম্পন্ন করে। ইজিএমে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের কাছে মেমোরেনডাম অব আর্টিক্যাল বা সংঘস্মারক উপস্থাপন (এডোব) করা হয়। উপস্থাপিত সংঘস্মারক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরজেএসসিতে দাখিল করে ডিএসই ও সিএসই। সংঘস্মারক দাখিলের ১৪ দিনের মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সনদ দিল আরজেএসসি।
এদিকে আইনানুসারে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজড হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী ডিএসই ও সিএসইর ১৩ সদস্যের পর্ষদ গঠন করতে হবে। এর মধ্যে ইনডেপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর (স্বতন্ত্র পরিচালক) হবেন সাতজন, স্টেকহোল্ডার চারজন, সিইও একজন এবং একজন স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টর (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) পরিচালক হিসেবে থাকবেন। তবে সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্য থেকে একজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।
সনদ পাওয়ার পর উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচন করতে হবে। স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচনের লক্ষ্যে আগামি সপ্তাহে পর্ষদ সভা আহ্বান করে একটি রিমোনারেশন কমিটি গঠন করতে হবে। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করবে স্টক এক্সচেঞ্জদ্বয়। গঠিত কমিটি সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয়নের জন্য আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতি একজনের জন্য দুইজন করে মোট ১৪ জনের নাম আহ্বান করবে। পরবর্তীতে তা অনুমোদনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) পাঠানো হবে। কমিশন সার্বিক দিক বিবেচনা করে ১৪ জনের মধ্যে থেকে সাতজনকে নির্বাচন করবে। পরে বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ২৪৬ জনের মধ্যে থেকে ভোটের মাধ্যমে চারজন স্টেকহোল্ডার নির্বাচন করে পূর্ণাঙ্গ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পর্ষদ গঠন করা হবে।
(দিরিপোর্ট/এনটি/এইচকে/এনডিএস/নভেম্বর ২১, ২০১৩)