‘একশ উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ’
জোসনা জামান, দিরিপোর্ট : দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে দেশের একশ উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রতিটি স্কুলে ৮৪০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নের সুযোগ পাবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের জন্য ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত কারিগরি বিষয় অন্তর্ভূক্ত, এসএসসি (ভোকেশনাল) সার্টিফিকেট কোর্স ও স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হতে পারে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যেই এটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে শ্রম বাজারে চাকরির সুযোগ সৃষ্টির জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে, জীবিকা নির্বাহের জন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠী আত্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং স্কুল পর্যায়ে কারিগরি বিষয় ছাড়াও চারটি ট্রেড কোর্স ও স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স প্রবর্তন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবদুল মান্নান হাওলাদার দিরিপোর্টকে বলেন, ‘৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি স্কুল স্থাপনের উল্লেখ রয়েছে। তাই এ প্রকল্পটি ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।’
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক ও ভৌত উভয় প্রকার উৎপাদনশীল সম্পদ সৃষ্টি করতে হলে প্রয়োজন দক্ষতা বৃদ্ধি করা। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে যুগোপযোগী ও শিল্প সম্পর্কিত করা অপরিহার্য। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য ১০০টি উপজেলায় প্রতিটিতে একটি করে মোট ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপনের জন্য ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়।
পরিকল্পনা কমিশনে ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভার সুপারিশ অনুযায়ী ব্যয় কমিয়ে ৯২৪ কোটি ৩ লাখ টাকা করে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ শেষে একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ১০০টি একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ (প্রতিটি ২২৬৫ বর্গমিটার), দেড়শ একর জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, মেশিনারী ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, আসবাবপত্র ক্রয়, বাউন্ডারি ওয়াল ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম করা হবে।
প্রস্তাবনায় প্রকল্প এলাকা নির্বাচনের যৌক্তিকতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দেশের যেসব উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নেই। অথবা সরকারি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও সরকারি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নেই সেসব উপজেলা থেকে নির্বাচিত ১০০টি উপজেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
(দিরিপোর্ট/জেজে/এইচএস/এসবি/নভেম্বর ২২, ২০১৩)