দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : সংশোধিত দুদক বিলে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও রিপোর্টার্স এগেইন্সট করাপশন (র‌্যাক)। এক যৌথ বিবৃতিতে শুক্রবার এই ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করা হয়।

জজ, ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়েরের জন্য সরকারের পূর্বানুমতির বিধান সম্বলিত দুদক (সংশোধনী) বিল, ২০১৩ পাস করে মহাজোট সরকার। ১৯ নভেম্বর গভীর রাতে তড়িঘড়ি করে বিলটিতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর সংগ্রহ করার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে টিআইবি ও র‌্যাক।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘১৭ নভেম্বর প্রেরিত পত্রের মাধ্যমে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগপূর্বক দুদক (সংশোধনী) বিল পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠাতে রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা আবেদন করেছিলাম। ১৯ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে সংবাদ মাধ্যমের সহায়তায় বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে আমাদের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছিলাম। সংশোধনীটি যে সংবিধান পরিপন্থী, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন, এ বিষয়গুলোর উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আমরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপের আহবান জানাই। তা সত্ত্বেও আমরা এটি জেনে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ যে, একই দিনে বিলটিতে এক প্রকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রপতির সম্মতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আলোচ্য বিলটি ফেরত পাঠানোর পক্ষে একদিকে সাংবিধানিক যৌক্তিকতা, অন্যদিকে জনস্বার্থ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার পরেও জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিলে সম্মতি প্রদান করে রাষ্ট্রপতি গণবিরোধী ও দুর্নীতি সহায়ক শক্তির কাছে পরাভূত হয়েছেন কিনা এ প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়াই স্বাভাবিক।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান হওয়া সত্ত্বেও উল্লেখিত ধারা বলে বিশেষ একটি শ্রেণীকে কার্যত বৈষম্যমূলকভাবে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি যখন বিনা বাক্য ব্যয়ে একমত হন, তখন জনগণ গভীর হতাশায় নিমজ্জিত হয়।’

নতুন সংশোধনী অনুযায়ী দুদকের সচিব নিয়োগের এখতিয়ার সরকারের উপর অর্পণ করা হয়েছে। অথচ ইতিপূর্বে এ ক্ষমতা দুদকের হাতে ছিল। এ পরিবর্তনও দুদকের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে বলে অভিমত টিআইবি ও র‌্যাকের।

১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদে দুর্নীতি দমন কমিশন সংশোধন বিল ২০১৩ পাস হয়।

(দিরিপোর্ট/এআই/এইচএস/এমএআর/নভেম্বর ২২, ২০১৩)