নারায়ণগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকট
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অর্ধলাখেরও বেশি আবাসিক গ্রাহক।
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে শনিবার দুপুরে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নতুন গ্যাস সংযোগ লাইন স্থাপন কাজ উদ্বোধন করতে এসে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হোসেন মনসুর বলেন, ‘গ্যাস সংকটের কথা বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন থেকে গোদনাইল হয়ে ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক এলাকা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পৃথক দু’টি সংযোগ লাইনের পাইপ স্থাপন করার কাজ শুরু করা হলো। এর মধ্যে একটি পাইপ ১৬ ইঞ্চি অপরটি ১২ ইঞ্চি। এ সংযোগ স্থাপন কাজ সম্পন্ন করতে শীতের মৌসুম পার হয়ে যাবে।’
এদিকে তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ অফিস জানিয়েছে, গৃহস্থালী কাজে গ্যাস ব্যবহারে জেলায় ৫০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। আর শিল্প-কারখানায় ছয় হাজারের অধিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এতে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা ১২০ মিলিয়ন ঘন ফুট।
শীত ছাড়া অন্য মৌসুমে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস পাওয়া যায় ৭৫ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘন ফুট। এতে ঘাটতি থাকে ৪৫ থাকে ৪০ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাসের। এখন শীত মৌসুমে পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ আরো কমে গেছে।
এ প্রসঙ্গে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের আহ্বায়ক হাজি নুরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সংকট রয়েছে। গৃহিনীরা দিনের বেলায় রান্নার কাজে গ্যাস পায় না। রাত ১০টায় চুলায় কিছুটা গ্যাসের দেখা মেলে। তাও চাপ খুবই কম। আবার ভোর পাঁচটার পর গ্যাস শূন্য হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গ্যাসের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছি। একাধিকবার তিতাস কার্যালয় ঘেরাও করা স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ একের পর এক আশ্বাস দিয়েও গ্যাস সংকট নিরসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। গত ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে হরতাল কর্মসূচিও দিয়েছিলাম। কিন্তু দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমরা গ্যাস না পেলেও প্রতি মাসে বিল আদায় করে নিচ্ছে তিতাস কোম্পানি। আর অবৈধ সংযোগ দেওয়াও থেমে নেই।’
অবৈধ গ্যাস লাইন প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ তিতাস কোম্পানির একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলার তিনটি উপজেলায় আরও অন্তত ১৫ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে বন্দর- সোনারগাঁও এবং রূপগঞ্জ। এ সংযোগ গত দু’বছরে দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, কোম্পানির কিছু ঠিকাদার, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ অবৈধ সংযোগ দিয়ে। সংযোগের দূরত্ব অনুযায়ী প্রতিজনের কাছে ২০ থেকে ৯০ হাজার টাকা আদায় করেছে তারা।
(দিরিপোর্ট/এনএ/এইচএস/এনডিএস/নভেম্বর ২৪, ২০১৩)