দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে মনির হোসেন হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন স্বর্ণা আক্তার কাকলী নিপা (২৭), শরিফ (৩৫) ও আনোয়ার হোসেন।

ডিবির দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। রবিবার ভোরে কামরাঙ্গীরচরের হাসান নগর ও কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মনিরকে হত্যা করা হয়। এ হত্যায় জড়িত আরেক আসামি ইব্রাহিম এখনও পলাতক।

গ্রেফতার আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পূর্ব শত্রুতার কারণে গত ১৭ এপ্রিল কৌশলে উক্ত মনির হোসেনকে মোবাইল ফোনে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন আশরাফাবাদ হুজুরপাড়া রোড নং-২, বাড়ী নং-৩ এর ৪র্থ তলায় আসামী নিপার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ডেকে নেয়।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে মনিরকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর মনিরের মাথা কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং দেহটিকে চাঁপাতি দিয়ে কুপিয়ে সাত টুকরা করে। টুকরাগুলো দুটি বস্তা এবং দুটি ব্যাগে করে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মাদবর গদীঘর ও চামচ ফ্যাক্টরীর নিকট দুটি বস্তা ফেলে দেয়। আর ব্যাগটি হাসান নগর কাজী ফারুকের বাড়ির পিছনে একটি ব্যাগ ফেলে দেয়।

গ্রেফতার হওয়া নিপা উক্ত মনির হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল। ঘটনার পূর্বে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে শরিফের সঙ্গে নিপার আবার বিয়ে হয়।

পরবর্তীতে মনির হোসেন নিপাকে আবার পাওয়ার জন্য আনোয়ারের দ্বারস্থ হয়। এর জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা নেয় আনোয়ার। পরে মনির হোসেন ওই টাকার জন্য আনোয়ারকে চাপ দেয়। এতে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক নিপাকে দিয়ে মনির হোসেনকে ডেকে এনে নৃশংসভাবে খুন করে।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবির পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, নিপার বাবা কসাইয়ের কাজ করত। নিপার বাসায় থাকা ধারালো চাঁপাতি ও ছুরি দিয়ে মনিরের মরদেহ কাটা হয়।

১৭ এপ্রিল সকালে তেজগাঁও যাবে বলে কেরানীগঞ্জের পুরাতন ধরনি বাড়ি এলাকার বাসা থেকে বের হয় মনির। পরদিন সকালে কেরানীগঞ্জের বাদশাহ প্রাইমারি স্কুলের সামনে অজ্ঞাত হিসেবে মনিরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে রাখা হলে ১৯ এপ্রিল বিকেলে নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। ওই দিনই কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন তিনি।

(দিরিপোর্ট/ডি/এমসি/নভেম্বর ২৪, ২০১৩)