হাসপাতালে গেলেন এরশাদ, কথা বলেননি জাফর
সাগর আনোয়ার, দিরিপোর্ট : পর পর তিনদিন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ঘুরে গেলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কেবিনের গেস্ট রুমে প্রতিদিন পাঁচ মিনিট করে বসে থাকলেন। কিন্তু কাজী জাফরের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী গোলাম মোস্তফা জানান, রবিবার সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এসেছিলেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায়ও স্যার (এরশাদ) এসেছিলেন। কিন্তু কাজী জাফর সাহেব অসুস্থ থাকায় কথা বলতে পারেননি।
জাপা সূত্রের দাবি, দলের বেশিরভাগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। কাজী জাফর দল থেকে চলে গেলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হবে এরশাদকে। এজন্য এই প্রেসিডিয়াম সদস্যের মান ভাঙাতে প্রতিদিন হাসপাতালে আসছেন জাপা চেয়ারম্যান।
সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ও কাজী জাফরের রুমে অবস্থান করছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা জামাল হায়দারসহ অন্তত দশজন কেন্দ্রীয় নেতা।
এ সময় দিরিপোর্টের সঙ্গে আলাপে কাজী জাফর বলেন, ‘আমি আমার সিদ্বান্তে অটল রয়েছি। স্যারকে দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা এজেন্টরা ভুল বুঝিয়েছেন। আমি স্যারের ভুল ধরিয়ে দিয়েছি। আমি জেনেশুনেই বিবৃতি দিয়েছি। আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল।’
উল্লেখ্য দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দেয়ায় পার্টির জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ শনিবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। এতে তিনি উল্লেখ করেন, এরশাদের নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দেওয়ায় সমগ্র জাতি হতভম্ব ও স্তম্ভিত হয়েছে।
কাজী জাফর আহমেদ বিবৃতিতে বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়ামকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পার্টির গৃহীত পূর্বাপর অবস্থানের বিপরীত এমন একটি সিদ্ধান্ত এরশাদ নিয়েছেন, যা জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুঃখ রাখার জায়গা নেই। এরশাদ জাতীয় পার্টিকে এক বিশ্বাসঘাতক গণধীকৃত পার্টি হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছেন। টেলিভিশনের পর্দায় যখন দেখি, আমাদের পার্টি ও তার নেতার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ থুথু নিক্ষেপ করছেন এবং ঝাড়ু ও জুতা নিয়ে মিছিল করছেন, তখন লজ্জা ও বেদনায় হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যায়।’
বিবৃতিতে কাজী জাফর আহমেদ জাপা নেতা কর্মীদের নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
(দিরিপোর্ট/এসএ/এইচএস/এমডি/নভেম্বর ২৪, ২০১৩)