সবচেয়ে কম বয়সে বুকার জিতলেন ইলেনর কটন
দ্য রিপোর্ট২৪ ডেস্ক : ইলেনর কটন ম্যান বুকার জিতে নেয়া সবচেয়ে কম বয়সী লেখক। নিউজিল্যান্ডের এই ফিকশন লেখক ২৮ বছর বয়সে জিতে নিলেন কমনওয়েলথ দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য ম্যান বুকার পুরস্কার। ফিকশনধর্মী উপন্যাস ‘দ্য লুমিনারিস`-এর জন্য তিনি ২০১৩ সালের এ পুরস্কার জয় করেন।
আটাশ বয়সী কটনের সঙ্গে পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন কলিন তইবন, নোভায়োলেট বুলাওয়াও, ঝুম্পা লাহিড়ী, রুথ ওজেকি এবং জিম ক্রিস। এদের অনেকে বিশ্বসাহিত্যে প্রতিষ্ঠিত লেখক। অক্টোবরের পনের তারিখে লন্ডনের গিল্ডহিলের অনুষ্ঠানে পুরস্কারস্বরূপ পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড তুলে দেন ডাচেস অব কর্নওয়েল ক্যামিলা পার্কার।
কটন ১৯৮৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কানাডায় জম্মগ্রহন করেন। এই সময় তার বাবা ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন ওন্টারিওতে ডক্টরেট করছিলেন। ছয় বছর বয়সে তিনি পরিবারের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডে ফিরে আসেন। দি লুমিনারিস কটনের দ্বিতীয় উপন্যাস। এটি তিনি পঁচিশ বছর বয়সে লেখা শুরু করেছিলেন। শেষ করতে তার দুই বছর সময় লাগে। এর আগে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস দি রিহার্সেল। উপন্যাসটির জন্যও তিনি বেশ ক’টি পুরস্কার জেতেন।
কটনের আগে বুকার পাওয়া কম বয়সী লেখক ছিলেন বেন অকরি। তিনি বত্রিশ বছর বয়সে ১৯৯১ সালে বুকার পান। কটনকে অকরি বয়সের রেকর্ড ভাঙ্গার জন্য শুভেচ্ছা জানান। তিনি আশা করেন, কটনের রেকর্ড ভাঙ্গতে আরো পনের বছর সময় লাগবে।
বিচারকরা ৮৩২ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসের বিস্ময়কর পরিপক্কতা ও গদ্যের প্রশংসা করেন। এটি ম্যান বুকারের ৪৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উপন্যাস। তারা আরো বলেন, এটার মহত্বের জন্য দৈর্ঘ্য কোন বিষয়ই নয়। তারা মনে করিয়ে দেন হিলারি মেনটেলের বুকারজয়ী উপন্যাস উলফ হল ও ব্রিয়িং আপ দি বডিসের কথা। ২০০৯ সালে বুকারজয়ী উলফ হলের উপন্যাসের পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল ৬৭২। কটন কৌতুক করে বলেন তার কাজটি ছিল প্রকাশকের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। পাণ্ডুলিপি এতো বড় ছিল যে বহন করার জন্য তাকে নতুন একটি হাতব্যাগ কিনতে হয়েছিল।
লুমিনারিস একটি ঐতিহাসিক ফিকশন। লুমিনারিসের কাহিনীতে উঠে এসেছে ভিক্টোরিয়ান নিউজিল্যান্ডের স্বর্ণ আবিষ্কারকালীন সময়, যাতে ছিল অর্থ, সম্পদ আর মূল্যবোধের হিসেব নিকেশ। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় স্বর্ণখনিতে আসেন উপন্যাসের নায়ক। এরপর জড়িয়ে পড়েন রহস্যে। আর এই রহস্যের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলে ফিকশন। এই সময়ের দীর্ঘ ও সূক্ষ্ম বর্ণনার জন্য উপন্যাসটি পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় উঠে আসে।
বইটি প্রকাশের পরপরই পাঠক ও সমালোচকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আগস্টে এটি দ্যা টেলিগ্রাফ পত্রিকার রিভিউতে পাঁচ তারা লাভ করে। বই বিক্রেতা ওয়েবসাইট ওয়াটারস্টোনের মতে, এটি উঠে যেতে পারে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত উপন্যাসের তালিকায়। এর আগে ইয়ান মার্টেলের বুকারজয়ী লাইফ অব পাই বিক্রি হয়েছিল দুই মিলিয়ন কপির বেশি। একই ধরনের বিক্রির তালিকায় আছে থমাস কর্ণেলীর সিন্ডলার্স আর্ক এবং মেনটেলের দুটো বই। এগুলো পুরস্কার জয়ের পর প্রচুর বিক্রি হয়।
কটন বলেন, এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে তিনি সম্মানবোধ করছেন এবং গর্বিত। নিউজিল্যান্ড থেকে তিনি দ্বিতীয় বুকারজয়ী লেখক। এর আগে ১৯৮৫ সালে এই পুরস্কার জিতেছিলেন কেরি হালমে। নিজ দেশে পুরস্কারটির উদযাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, সকলেই মনে করছে এই সাফল্য অংশত তাদের।
(দ্য রিপোর্ট২৪/ডব্লিউএস/এমডি/অক্টোবর ২০, ২০১৩)