১৮ দলের অবরোধে ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌ-পথ অবরোধের প্রথমদিন মঙ্গলবার ঢাকার সঙ্গে অন্যান্য জেলার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে রেলের বগিতে আগুন, রেললাইন ও রেল লাইনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলা এবং সিগন্যাল লাইট ভাঙচুর করা হয়। এতে বন্ধ হয়ে গেছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
রেল কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, সোমবার রাত থেকেই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নাশকতা শুরু হয়। মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার ইমামবাড়ি রেলস্টেশনের উত্তর দিকের আউটার এলাকায় দুটি জায়গায় রেললাইনের ৫৫০ ফুট উপড়ে ফেলে আবরোধকারীরা। এছাড়া আখাউড়ায় রেলের ফিসপ্লেট খুলে ফেলা ও সিগন্যাল লাইট ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই অঞ্চলে দফায় দফায় অবরোধকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।
সকাল থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনের ট্রেন সময় মতো ছেড়ে যাওয়ার দাবি করছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ। তবে যাত্রীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী কোনো ট্রেনই সময় মতো ছেড়ে যাচ্ছে না।
জানা যায়, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী সিন্ধুর প্রভাতী ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর ছেড়ে গেছে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস সোমবার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে গেলেও এখনও তা চট্টগ্রামে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান রেল নিয়ন্ত্রক মো. খলিলুর রহমান।
তিনি দিরিপোর্টকে বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) রাত থেকেই চট্টগ্রাম-ঢাকা এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে দেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আখাউড়া এলাকায় অবরোধ করে রাখা হয়েছে। রেল পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাইনটি সচল করার চেষ্টা করছে। তবে ফিসপ্লেট ও রেল লাইন উপড়ে ফেলার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে বেশ সময় লাগবে। এছাড়া ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এই অঞ্চলটিও এখনও ক্লিয়ার হয়নি।’
এ ব্যাপারে রেলের আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম দিরিপোর্টকে বলেন, ‘যে এলাকায় রেল লাইন ও রেলের ফিসপ্লেট তুলে ফেলা হয়েছে সে অঞ্চলের সঙ্গে কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। এই জায়গাটি একটি মাঠের মধ্যে হওয়ায় আমাদের টিম এখানে সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। রেলের আখাউড়া অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য আমরা জেলা প্রশাসককে বিজিবি মোতায়েনের জন্য অনুরোধ করেছি। জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানো হয়েছে আখাউড়া লাইনের নিরাপত্তার জন্য বিজিবি ডাকা হয়েছে, শিগগিরই রেল পুলিশের সঙ্গে বিজিবিও কাজ করবে।’
ঢাকা অঞ্চলের রেল নিয়ন্ত্রণ শাখার সঙ্গে কথা বলা হলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী সকল ট্রেনই বন্ধ রয়েছে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কখন রেলের এই অচল অবস্থা ঠিক হবে। ঢাকা অঞ্চলে নাশকতা না ঘটায় বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা অবগত না। আমরা চট্টগ্রাম অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, তাদের কাছ থেকে নিশ্চয়তা পেলে ট্রেন ছাড়তে শুরু করবো।’
রেলের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা থেকে চট্টগ্রামগামী ছেড়ে যাওয়া অধিকাংশ ট্রেনই আখাউড়া রেল স্টেশনে আটকে আছে। এছাড়া ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সকল ট্রেনই আপাতত বন্ধ রয়েছে।’
এসব বিষয়ে রেলের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে অধিকাংশ কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
(দিরিপোর্ট/এইচআর/এইচএসএম/নভেম্বর ২৬, ২০১৩)