জুতাতে স্বাস্থ্যহানি
কেবল ফ্যাশনে নয়, জুতা আসলে জীবনের একটা অপরিহার্য উপাদান। জুতা ছাড়া একটি দিন কল্পনা করা যায়? একেবারেই না! কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কি, এই জুতা জোড়াও হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যহানির কারণ? হ্যাঁ, একদম ঠিক শুনেছেন। যদি সঠিক উচ্চতা বা ধরনের জুতা পরা না হয়, তাহলে তা হতে পারে আপনার জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য হুমকি। কী করে? আসুন জেনে নিই!
হাইহিলে বিপদ : ফ্যাশনপ্রিয় নারীরা তাদের সাজসজ্জার এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বেছে নিয়ে থাকেন হিল জুতাকে। শুধু স্বাস্থ্যহানি বললে অনেকটাই কম বলা হয়, উঁচু হিলের জুতো পরার কারণে ভয়াবহ সব শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হবেন আপনি।
প্রতিনিয়ত হাই-হিলের ব্যবহার শিরদাঁড়ার অসুখ ছাড়াও বাড়িয়ে দেয় অস্থিসন্ধির ক্ষয়ের সম্ভাবনা। দীর্ঘস্থায়ী পিঠব্যথা বা আর্থ্রাইটিসের জন্যও দায়ী উঁচু হিলের ব্যবহার। চলতি পথে হিলের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে যায় অনেকটাই। দুই ইঞ্চি উচ্চতার হিল পায়ের গোড়ালিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি চাপ সৃষ্টি করে। স্বাস্থ্যঝুঁকি ফ্ল্যাট স্যান্ডেলেও— ভাবছেন কেবল হাই হিলেই স্বাস্থ্যহানি হয়? তাহলে আপনার এই ধারণা একদম ভুল। স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি থেকে যায় একদম ফ্ল্যাট জুতাতেও! হাই হিল যেমন পিঠ বা শিরদাঁড়ার ব্যথা সৃষ্টি করে, তেমনি গোড়ালির অসহ্য ব্যথার জন্য দায়ী চটিজুতা। আপাতদৃষ্টিতে আরামদায়ক হলেও একাধারে চটিজুতা ব্যবহার করতে থাকলে প্রথম অবস্থায় গোড়ালি ব্যথা, খুব শীঘ্রই পরিণত হয় শিরদাঁড়ার ব্যথায়। একনাগাড়ে ফ্ল্যাট জুতা না পরে মাঝে মাঝে সামান্য হিলযুক্ত জুতা পরুন। তাহলে কেমন উচ্চতার জুতো? ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বায়োমেডিক্যাল ল্যাবরেটরির এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে, একজন মানুষ গড়ে দিনে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ বার পা ফেলে থাকেন। কেউ যদি ৭০ বছর বাঁচেন, তা হলে তার পা ফেলার সংখ্যা অনুমান করা যাচ্ছে সহজেই। স্বভাবতই এত বার পা ফেলার পরে তা সুস্থ রাখতে ঠিক জুতা পরার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী গোড়ালি, হাঁটু ও কোমর ঠিক রাখতে পাম্প শু বা ব্যাকস্ট্র্যাপ দেয়া কম হিলের জুতা সবচেয়ে ভালো। প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য হিলের উচ্চতা দেড় ইঞ্চির বেশি হওয়া উচিত নয় কখনই। আর স্টিলেটো বা চিকন হিলের বদলে চৌকো বা ওয়েজ হিল স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা হলেও কম করতে সাহায্য করে।