দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘অবরোধ কর্মসূচি দমনে সরকার উঠে পড়ে লেগেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথমদিন মঙ্গলবার শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ১৮ দলের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

রিজভী বলেন, ‘সরকারের মুখপেক্ষী হয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করেছে। বিএনপিসহ সুশীল সমাজ এ তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তফসিল ঘোষণা বর্তমান অবৈধ সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের যৌথ পরিকল্পনায় ‘জাতীয় তামাশা’।

বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাজানো প্রশাসন সোমবার থেকেই বেপরোয়া অভিযান চালিয়ে দলের সিনিয়র নেতা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহসহ দেশব্যাপী অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, হত্যা এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আহত করেছে। ভ্রাম্যমান আদালত দিয়ে বেআইনি দণ্ড ও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।

তিনি ‘অতিউৎসাহী’ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিরোধী দলের কর্মসূচি দমন করতে আপনারা যে ঘাতক বাহিনীর ভূমিকা পালন করছেন, সেজন্য আপনাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো কোনো সদস্য মাত্রাতিরিক্ত আচরণ করছেন, তার সমস্ত প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আজকের এই উন্নত প্রযুক্তির যুগে কোনো কিছু লুকানো থাকে না।’

‘সারাদেশে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন হচ্ছে’- এমন দাবি করে রিজভী বলেন, ‘দানবীয় সরকার নির্যাতন, গ্রেফতার কোনো কিছুই বাদ দেয়নি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে আসেন না কেন?- এ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা হান্নান শাহকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তাকে যেভাবে গ্রেপ্তার করেছে সেটা আপনাদের অজানা নেই। উনার (মির্জা ফখরুল ইসলাম) পক্ষ থেকে আমি দায়িত্ব পালন করছি। তিনি আছেন এবং নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। নেতা-কর্মীরা তার ঘোষিত কর্মসূচি পালন করছেন।’

অবরোধ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নরুল ইসলাম নাহিদের আহ্বানের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আপনি তো নির্বাচন কমিশনকে বলতে পারতেন, যাতে এখন তফসিল ঘোষাণা না করা হয়। আপনি তো (শিক্ষামন্ত্রী) প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলতে পারেন। তিনি পদত্যাগ করলেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সংলাপ-সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী। কিন্তু তারা (সরকার) ক্ষমতা থাকার আনন্দে বিভোর হয়ে আছে।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘সংলাপের ব্যাপারে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। তারা মুখে বলছে সংলাপ চাই। কই, তারা তো এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ দেয়নি, সময় নির্দিষ্ট করে বলেনি। আশা করি, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের এক বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমঝোতার দায়িত্ব সরকারের। তারা যখন সংবিধান সংশোধন করেছে তখন দেশের রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ সবাই বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তারা কারো কথা শুনেনি।’

(দিরিপোর্ট/এমএইচ/এমএআর/নভেম্বর ২৬, ২০১৩)