শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাব না : খালেদা জিয়া
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না এবং শেখ হাসিনার অধীনেও নির্বাচনে যাবেন না।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস থাকলে সমানে সমানে দাঁড়ান। নিদর্লীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ জয় পেলে স্বাগত জানাবে বিএনপি।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখনও সময় আছে, সংবিধান সংশোধন করুন। যত দিন যাচ্ছে আপনারা জনগণ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। কাজেই সময় থাকতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।’
পেশাজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়েছেন, বক্তব্য রেখেছেন। আশা করি আপনারা তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে সামনের দিনগুলোতেও আমার পাশে থাকবেন। যদি নাও থাকেন আমি একাই তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে লড়ে যাব।’
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘আপনার নৌকা ফুটো হয়ে গেছে। আপনার নৌকায় আর কোনো মাঝি উঠবে না। সারা দেশের মানুষ আজ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। এ নির্বাচন আপনাদের অধীনে সম্ভব নয়। কারণ আপনার কতগুলো কার্যকলাপই বলে দেয় আপনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এই নির্বাচন করা মানে নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমরা ভোলা আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচনের পরে আর কোনো নির্বাচন করিনি। ওই নির্বাচনেই প্রমাণিত হয়েছে আপনাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না।’
মেয়র নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো জাতীয় কোনো নির্বাচন নয়। এগুলো ছিল নির্দলীয় নির্বাচন। আপনারা মনে করেছিলেন ফাঁকা মাঠে গোল দেবেন। কিন্তু সেই এলাকার জনগণ এক হয়ে আপনাদের পরাজিত করেছে। পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেখেই আপনাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
বিরোধীদলের নেতা বলেন, ‘২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি সংবিধান অনুযায়ী কে এম হাসানের অধীনে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তখন আপনারা তার অধীনে নির্বাচন মানেননি, এখন আমরা কেন মানবো? এখনও সময় আছে, আপনাদের সংখ্যাগরিষ্টতা আছে, সংবিধান সংশোধন করুন। যতদিন যাচ্ছে আপনারা জনগণ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। কাজেই সময় থাকতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। আর যদি মনে করেন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি দিয়ে নির্বাচন করাবেন, সেটা ভুল। এই দেশে সেটা হতে দেওয়া হবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, আপনার মুখে গণতন্ত্র মানায় না। কারণ আপনি বারবার স্বৈরশাসককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের শপথের সময় গিয়েছিলেন। তাদের সব কাজের বৈধতা দেওয়ারে কথা বলেছিলেন।
খালেদা জিয়া এ সময় ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চান, ইলিয়াস আলীকে ফেরত চান। তিনি অভিযোগ করেন, চৌধুরী আলমকে গুম করা হয়েছে। শিবিরের সভাপতি দেলোয়ারের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। তাই যুব সমাজকে বলবো, তোমাদের জাগতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা যা বলছেন, আর বিলবোর্ডে যা ছাপাচ্ছেন, এসব অফিস আদালতে ঘেটে দেখেন- লজ্জা পাবেন। এগুলো সব মিথ্যা। উন্নয়ন যা করার আমাদের সময় করেছি। আপনারা কোনো উন্নয়ন করেননি।
‘আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে বাঁচান। আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করুন। তাহলে দেশের উন্নয়ন হবে’ -মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।
(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/এমএআর/জেএম/অক্টোবর ২১, ২০১৩)