ট্রেনযাত্রীদের বাঁচালেন কৃষক তাজুল
মনিরুজ্জামান বাবলু, চাঁদপুর সংবাদদাতা : চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনের পাঁচ শতাধিক যাত্রীর জীবন বাঁচালেন উপলতা গ্রামের কৃষক তাজুল। চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের একটি স্থানে উপড়ানো রেললাইনের সামনে কাপড় উড়িয়ে ট্রেনটি থামালে জীবন বাঁচে যাত্রীদের।
১৮ দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার ভোর রাতে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উয়ারুক এলাকায় রেললাইনের স্লিপার উপড়ে ফেলে অবরোধকারীরা।
ফলে ঝুঁকিতে পড়ে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী। শুধু কৃষক তাজুল ইসলামের সতর্কতায় রক্ষা পেল ট্রেনটির শতাধিক যাত্রী। এলাকাবাসী জানান, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উয়ারুক বাজার ও মেহের স্টেশনের মাঝ বরাবর স্লিপার উপড়ে ফেলে অবরোধকারীরা। এ খবর জানা ছিল না রেলকর্তৃপক্ষের। যে কারণে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে নিয়ম অনুযায়ী ছেড়ে যায় মেঘনা এক্সপ্রেস।
কৃষক তাজুল ইসলাম জানান, ‘ভোরে নামাজ পড়ে ঘর থেকে বের হই। রেললাইনে গিয়ে দেখি লাইনের কিছু অংশ উল্টে রাখা হয়েছে। তখনই দেখি চট্টগ্রামগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি এগিয়ে আসছে।
হঠাৎ বুদ্ধি করে একটি লাঠির মধ্যে পেটিকোট (মহিলাদের পরণের কাপড়) ঝুলিয়ে দৌঁড়ে ছুটতে থাকি সামনের দিকে। ট্রেন চালকের দৃষ্টি পড়ে ওই কাপড়ের নিশানার দিকে। তিনি ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন।’
এ ঘটনার পর চাঁদপুর-লাকসাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। পাঁচ ঘণ্টা পর পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, তাজুল বিষয়টি না জানালে মানুষের প্রাণহানিসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো।
জানা যায়, তাজুল ইসলাম (৬০) পেশায় একজন কৃষক। তিনি শাহরাস্তি পৌরসভার উপলতা গ্রামের বাসিন্দা। তার চার ছেলে এক মেয়ে।
ওই ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মুখে এখন শুধু তাজুলের নাম। সবাই বলছে, আমাদের তাজুলের কারণেই রক্ষা পেল শতাধিক যাত্রীর জীবন।
(দ্য রিপোর্ট/এমবি/এআইএম/এমএআর/নভেম্বর ২৭, ২০১৩)