প্রথম প্রয়োগেই সমালোচিত গোললাইন টেকনোলজি
ফিফা ৪ বছর আগেই গোললাইন টেকনোলজি (জিএলটি) প্রয়োগের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিল। সেই দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই প্রযুক্তির ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। সঙ্গে নানা সমালোচনায় বন্ধ ছিল এর ব্যবহার। মাঠের নানা বির্তক এড়াতে চলতি বছর থেকে সেই প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। কিন্তু ব্রাজিলে প্রথম প্রয়োগেই সমালোচনার ঝড় তুলেছে গোললাইন টেকনোলজি (জিএলটি)।
বিশ্বকাপের চতুর্থ দিনে হন্ডুরাসের বিপক্ষে ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোল নিয়ে চলছে আলোচনা। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার শট সাইডবারে লেগে হন্ডুরাস গোলরক্ষক নোয়েল ভ্যালাদারেসের হাতে যায়। বলের গতিতে হতচকিত ভ্যালাদারেস ঠিকভাবে গ্রিপ করতে পারেননি, ক্ষণিকের জন্য বল গোললাইন অতিক্রম করে। আর এখানেই শুরু হয়েছে বিপত্তির। সিদ্ধান্তের জন্য ব্রাজিলিয়ান রেফারি রিকি স্যান্দ্রো আশ্রয় নিয়েছেন গোললাইন টেকনোলজির। ফল, ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোলটা এলো ভ্যালদারেসের ‘আত্মঘাতী’ হিসেবে।
জিএলটি’র সিদ্ধান্তে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানিয়েছেন হন্ডুরাসের কলাম্বিয়ান কোচ লুই ফার্নান্দেজ সুয়ারেজ। ম্যাচশেষে ফ্রান্সের জয় আর গতিময় পারফরম্যান্সের কথা স্বীকার করলেও জিএলটির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তার মত, ‘হেরেছি বলে মন খারাপ করছি না, বরং গোলের সিদ্ধান্তটা বিতর্কিতভাবে দেওয়া হয়েছে বলেই আফসোস হচ্ছে।’ জিএলটির সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে গেলেও বিষয়টা নিয়ে বিভ্রান্ত ফ্রেঞ্চ কোচ দিদিয়ের দেশ্যাম্প। দলের পারফরম্যান্স উজ্জীবিত করেছে তাকে। আর জিএলটি সম্পর্কে তার মন্তব্য, ‘বিষয়টা বুঝতে একটু কষ্টই হয়। তারপরও এটা পরীক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য।’
গোললাইন টেকনোলজি সম্পর্কে ইংল্যান্ডের সাবেক স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকার বলেছেন, ‘ওই গোলটা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নই আমি, তারপরও প্রযুক্তির ওপর আস্থা রাখতেই হচ্ছে।’ আর সাবেক ফরাসি ফরোয়ার্ড থিয়েরি অঁরির মতে, ‘আইন তো আইন-ই; আমরা তা পছন্দ করি; কিংবা না করি।’
উল্লেখ্য, গোললাইন টেকনোলজিতে মূলত ‘হক-আই’ এবং ‘গোল-রেফ’ নামের দু’টি ভিন্ন ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। আকাশে থাকা হক-আই ক্যামেরায় বলের গতিবিধি লক্ষ্য করা হয়। আর গোল-রেফ টেকনোলজির মাধ্যমে বলের ভেতরে থাকা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল নিশ্চিত করে বলটি আদৌ গোললাইন অতিক্রম করেছে কি না। ফ্রান্সের বিতর্কিত ওই গোলটি হক-আই এর সিদ্ধান্তে গোল না হলেও গোল-রেফ সিগন্যালের কারণে গোল দেওয়া হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/জেডএম/এএস/ওআইসি/আরকে/জুন ২৭, ২০১৪)