সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড উচ্ছেদ
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বারআউলিয়া এলাকায় বন বিভাগের গাছ উজাড় করে গড়ে তোলা ‘এস কে স্টিল’ শিপব্রেকিং ইয়ার্ডকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুরে ইয়ার্ডটি সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করা হয়।
এ সময় ইয়ার্ডের টিনশেড গ্যাস সিলিন্ডারের একটি গুদাম, একটি দ্বিতল ভবন, একটি একতলা ভবন, একটি অয়েল চেম্বার, জাহাজ টানার পাঁচটি হুইঞ্চ মেশিন সরিয়ে নেওয়া হয়।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (জেনারেল সার্টিফিকেশন) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন, কুমিরা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, এলজিইডি এবং বিস্ফোরক অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়টি দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইয়ার্ডটির আংশিক উচ্ছেদ করা হয়েছিল। বিজ্ঞ উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে বুধবার ইয়ার্ডটি সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করা হলো।
জানা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বারআউলিয়া সমুদ্র উপকূলে বনবিভাগের প্রায় ১৫ হাজার গাছ কেটে ২০০৯ সালে এসকে স্টিল শিপব্রেকিং ইয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়। এ ঘটনায় সে সময় ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছিল। মূলত নাজিম ও তার ভাইয়েরা মিলে ইয়ার্ডটি গড়ে তুলেছিল।
পরে গত বছরের ৬ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বনভূমি ধ্বংস করে নির্মিত জাহাজ ভাঙার কারখানা (শিপব্রেকিং ইয়ার্ড) উচ্ছেদ করে নতুনভাবে বনায়নের নির্দেশ দেন। গত ৩০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আরেক আদেশে ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইয়ার্ড ও অন্যান্য সামগ্রী উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে প্রশাসন। কিন্তু ইয়ার্ডটি সে সময় সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
পরে গত ২৬ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আরেক আদেশে অবশিষ্ট স্থাপনাও উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে উপকূলীয় বন বিভাগকে আবারও বনায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই আলোকে বুধবার জেলা প্রশাসন পুনরায় অভিযান চালিয়ে ইয়ার্ডটি সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করেছে।
এদিকে উচ্ছেদ করা ইয়ার্ড এলাকায় বনায়নের কাজ শুরু করেছে উপকূলীয় বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এই এলাকায় বনায়নের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় উপকূলীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আরএসএম মুনিরুল ইসলাম।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ-কেএইচ/এমএইচও/এপি/জুন ১৮, ২০১৪)